গত মঙ্গলবার পুলিশের জালে ধরা পড়েছে কমপক্ষে ১০০ জনের হত্যাকারী দিল্লির আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক দেবেন্দ্র শর্মা। হত্যার পরে দেহ কুমিরকে খাইয়ে লোপাট করেছে বলে কবুল করেছে দুষ্কৃতী। জেরায় দেবেন্দ্র জানিয়েছে, তার অধিকাংশ শিকারই ছিল হরিয়ানা ও দিল্লির ট্যাক্সি ও ট্রাকচালকরা। ২০০৩ সালে আরও কয়েক জনের সঙ্গে সে ট্যাক্সি ছিনতাই চক্র গড়ে তোলে। আলিগড় থেকে তারা ট্যাক্সি ভাড়া করত। তার পরে নিরালা জায়গায় সুযোগ বুঝে চালককে খুন করে ট্যাক্সি হাতানোর একাধিক ঘটনা ঘটায় এই চক্র। খুনের প্রমাণ লোপাট করতে মৃতদেহ টুকরো করে কাশগঞ্জ খালে ফেলে দেওয়া হত। ওই খালে বাস করা কুমিররা মানবদেহের টুকরোগুলি নিমেষে উদরস্থ করত, এমনই জানিয়েছে এই সিরিয়াল কিলার।শুধু খুনই নয়, প্রতারণা, ছিনতাই, কিডনি পাচার চক্র চালানোর অভিযোগও রয়েছে দেবেন্দ্র শর্মার নামে। জানা গিয়েছে, ১৯৮৪ সালে বিহারের সিওয়ান থেকে সে আয়ুর্বেদ শাস্ত্র নিয়ে স্নাতক হওয়ার পরে জয়পুরে ক্লিনিক খুলে চিকিৎসা শুরু করে। কয়েক বছর পরে ১৯৯২ সালে রান্নার গ্যাসের এজেন্সি নিতে গিয়ে ১১ লাখ টাকা খরচ করার পরে প্রতারিত হয়। এর পর ১৯৯৫ সালে সে আলিগড়ে বুয়ো গ্যাস এজেন্সি খুলে বসে। ২০০১ সালে আমরোহায় দ্বিতীয় ভুয়ো গ্যাস এজেন্সি খোলে সে। এই ভাবেই ধীরে ধীরে অপরাধ জগতের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে।২০০৩ সালে সে কিডনি পাচার চক্রে যুক্ত হয়ে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ১২৫ জনের অবৈধ কিডনি প্রতিস্থাপন করে। ২০০৪ সালে আরও কয়েক জন চিকিৎসকের সঙ্গে সে গ্রেফতার হয়। জেরায় সে জানায়, প্রতিটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য ৫-৭ লাখ টাকা নেওয়া হত। বিচারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় দেবেন্দ্র শর্মার। টানা ১৬ বছর জেলে কাটানোর পরে গত জানুয়ারি মাসে তাকে কুড়ি দিনের প্যারোলে ছাড়া হয়। প্রথমে গ্রামের বাড়িতে গেলেও পরে সে পালিয়ে দিল্লি চলে যায়। প্রথমে মোহন গার্ডেন এলাকায় এক পরিচিতের বাড়িতে লুকিয়ে থাকার পরে সে বাপরোলায় আশ্রয় নেয়। পুলিশের দাবি, দিল্লিতে সে জমি কেনাবেচার ব্যবসা শুরু করেছিল। কিন্তু তার পরেই ফের গ্রেফতার হয়। গ্রেফতার হওয়ার পরে শান্ত ভাবেই সে পুলিশের জেরার জবাব দিয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।