বাংলাদেশের আজাদুল হক বরাবর সৌখিন মানুষ, বলা ভালো সৌখিন কৃষক। গোটা বছর ধরেই তিনি বাণিজ্যিক ভাবে লাউ, বেগুন, তরমুজ, বরবটি, সহ একাধিক সবজি ফলান তাঁর জমিতে। তবে এটুকুতেই তিনি থেমে নেই। চাষের ক্ষেত্রে তাঁর নতুন আবিষ্কার করতে ভীষণই ভালো লাগে।এক এক সময় এক এক ধরনের সবজি ফলিয়ে তিনি তাক লাগিয়ে দেন সকলকে। এবারও তিনি লাল ঢেঁড়শ ফলিয়ে রীতিমত সকলকে চমকে দিয়েছেন। শুধুমাত্র জৈবসার প্রয়োগ করেই তিনি এই লাল ঢেঁড়শ ফলাতে সক্ষম হয়েছেন। এতে তিনি কোনও রকম রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করেননি।এই লাল ঢেঁড়শ উৎপাদনে তাঁর খরচ বেশ অনেকটাই কম হয়েছে অন্যান্য সবজির থেকে। তাই তিনি এবার দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন এই লাল ঢেঁড়শ বিক্রির মাধ্যমে। যেহেতু স্থানীয় বাজারে এই ঢেঁড়শের বেশ চাহিদা আছে তাই তিনি বিক্রি করে ভীষণ খুশি।আজাদুল হক থাকেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার বাউতোলা গ্রামে। তাঁর এই নতুন ধরনের লাল ঢেঁড়শ বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে তাই তো আশপাশ থেকে অনেকে এসেই তাঁর থেকে এই চাষের বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে যাচ্ছেন। এখন যদি আপনি তাঁর জমিতে যান, তাহলে দেখতে পাবেন সবুজের সমারোহের মাঝে ফলে আছে লাল রঙের ঢেঁড়শ। একই সঙ্গে আছে সাদা বরবটি এবং করলা। এই জমি নিয়েই তিনি দিন রাত ব্যস্ত থাকেন। এগুলোর পরিচর্যা করতে করতেই তাঁর দিন কেটে যায়।তবে এই মজাদার কৃষকের গোটা জীবনী শুনলে তাঁর চাষের মতোই অবাক হয়ে যাবে। দীর্ঘ পনের বছর তিনি বিদেশে ছিলেন। চার বছর আগে তিনি সব ছেড়ে দেশে ফেরেন। আর এরপরই কেমন যেন বেকার হয়ে পড়েন। তখন সেই বেকারত্ব কাটাতেই চাষের প্রতি ঝোঁক বাড়ে তাঁর। আর সেটাই ক্রমে আগ্রহ থেকে নেশা হয়ে দাঁড়ায়। এখানকার কৃষি অফিসের পরামর্শে শুরু করেন লাউ বেগুন চাষ। আর তাতেই পান দারুন সাফল্য। চাষের খরচ ছাড়াও বছরে তাঁর অতিরিক্ত আয় হয় ৪০ হাজার টাকা। এবার তাঁর আগ্রহ আরও বাড়তে থাকে। সঙ্গে বাড়তে থাকে তাঁর জমির পরিমাণ। এখন তিনি একের পর এক পরীক্ষামূলক চাষ করে সকলকে চমকে দিচ্ছেন। এটাই এখন তাঁর ধ্যান জ্ঞান।