নথি আপলোডের জন্য ইতিমধ্যে ২০ জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই পদ্ধতি শম্বুকগতিতে এগোচ্ছে। তাই সব জেলার শিক্ষা আধিকারিকদের কড়া চিঠি লিখে বিহার সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ২০ জুলাইয়ের মধ্যে নথি আপলোড না করলে শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া অবৈধ বলে ঘোষণা করা হবে। আদায় করা হবে বেতনও। যে শিক্ষকদের ২০০৬ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে নিয়োগ করা হয়েছে।সব জেলার শিক্ষা আধিকারিকদের পাঠানো চিঠিতে প্রাথমিক শিক্ষার অধিকর্তা রঞ্জিত কুমার চিঠিতে লিখেছেন, ‘যদি নথি আপলোড না করা হয়, তাহলে তাঁদের (ওই শিক্ষকদের) নিয়োগের বৈধতা নিয়ে কিছু বলার নেই। প্রাথমিকভাবে তাঁদের নিয়োগ নিয়মবহির্ভূত বা অবৈধ বলে বিবেচনা করা হবে। তারপর শুরু হবে তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া। যে বেতন দেওয়া হয়েছে, তা নিয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে আদায় করা হবে।’ অর্থাৎ আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে নথি আপলোড না করলে শিক্ষকদের চাকরি যাবে।২০০৬ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিহারে পঞ্চায়েত এবং স্থানীয় পুরসভার মাধ্যমে যে শিক্ষক নিয়োগ চলত, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই সময়ের মধ্যে ২,০৮২ জন লাইব্রেরিয়ান-সহ ৩.৫২ লাখ শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ৩.১১ লাখ প্রাথমিক শিক্ষক ছিলেন। তাতে আবার ১.৪ লাখ শিক্ষামিত্রও ছিলেন। তাঁদের মাসিক ১,৫০০ টাকা ভাতা দেওয়া হত। পরে তাঁদের পঞ্চায়েত শিক্ষক পদের স্তরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সবমিলিয়ে ১.২৫ লাখ শিক্ষকের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি মিলছে না খবর।২০১৫ সালে ভিজিল্যান্স ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার সময় পাটনা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এল নরসীমা রেড্ডির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে জানিয়েছিলেন, গত এক দশকে ভুয়ো শংসাপত্রধারী প্রার্থীদের যেভাবে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। বিষয়টি নরম হাতে সামলেছে রাজ্য। তাই ২০০৬ সাল থেকে যে শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের শংসাপত্রের বৈধতা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। যদিও বছরপাঁচেক পরে ব্যুরোর তরফে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে হারিয়ে যাওয়া নথি পাঠানো হচ্ছে না। পালটা দফতরের তরফে পঞ্চায়েত ব্যবস্থার বিভিন্ন নিয়োগকারী সংস্থার উপর দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়। তা নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকোর্ট। কড়া ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। তারপরই নথি আপলোডের দায়ভার শিক্ষকদের কোর্টেই ঠেলে দেয় রাজ্য সরকার।