চিনের নয়টি দরিদ্রতম কাউন্টিও অবশেষ দারিদ্রমুক্ত হল। সোমবার এই খবর প্রকাশ করেছে চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম। সেই সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে দরিদ্রতমদের দারিদ্ররেখার উপরে তোলার সরকারি প্রয়াসও সফল হল বেজিংয়ের।এই নয়টি কাউন্টিই দক্ষিন-পশ্চিম চিনের গুইঝৌ প্রদেশের অন্তর্গত। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম শিনহুয়া সোমবার জানিয়েছে, ‘২০২০ সালের মধ্যে চূড়ান্ত দারিদ্র দূর করার অঙ্গিকার করেছিল চিন। ২০১৯ সালের শেষে উত্তর-পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ চিনের ৫২টি কাউন্টি দরিদ্রতম তালিকায় ছিল।’২০১৭ সাল থেকে দারিদ্র-সহ প্রধানত তিনটি কঠিনতম লড়াই লড়ছে চিন। অন্য দুটি হল কার্বন দূষণ এবং আর্থিক ঝুঁকির মাত্রা হ্রাস করা। গত সপ্তাহে সিচুয়ান প্রদেশের লিয়াংশান ইয়ি অটোনমাস প্রিফেকচার-এর অন্তর্গত ৭টি কাউন্টি জাতীয় চরম দারিদ্র তালিকা থেকে বাদ পড়ে। চিনের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী,এ পর্যন্ত দেশের ৮৫ কোটি মানুষকে দারিদ্ররেখা থেকে মুক্ত করা গিয়েছে। এর জেরে বিশ্বব্যাপী দারিদ্রমুক্তি অভিযানে ৭০% অবদান রেখেছে চিন। গত সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের সাধারণ বিতর্কে ভিডিয়ো লিঙ্কের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, ২০৩০ সালে সম্পূর্ণ দারিদ্রমুক্তির লক্ষমাত্রা পূরণ করতে পারবে বলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ চিন। তাঁর দাবি, নির্ধারিত সময়ের ১০ বছর আগেই এই লক্ষে পৌঁছবে চিন। একটি কাউন্টি দারিদ্র তালিকা থেকে বাদ পড়তে হলে তিনটি শর্ত পূর্ণ হওয়া জরুরি। প্রথমত, রোজগার, দ্বিতীয়ত দুশ্চিন্তা মুক্তি এবং তৃতীয়ত গ্যারান্টি। প্রথম ক্ষেত্রে, ২০১০ সালে প্রত্যেক কৃষকের বার্ষিক আয় ছিল ২,৩০০ ইউয়ান। মূল্য সূচক অনুযায়ী, গত বছরের শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩,২১৮ ইউয়ান এবং চলতি বছরে তা হয়েছে ৪,০০০ ইউয়ান।দুশ্চিন্তামুক্তির প্রধান দুটি বিষয় হল খাদ্য ও পোশাকের অভাব দূর হওয়া। গ্যারান্টি ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় হল, বাধ্যতামূলক শিক্ষা, প্রাথমিক চিকিৎসা পরিষেবা এবং বাসস্থানজনিত নিশ্চয়তা। যদিও দারিদ্র দূরীকরণের ক্ষেত্রে চিন সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যানের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বের বহু বিশেষজ্ঞ। গত মে মাসে চিনে দরিদ্রের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন ফের ওঠে যখন দেশের প্রিমিয়ার লি কেকিয়াং বলেন যে, প্রায় ৬০ কোটি চিনা নাগরিকের মাসিক আয় ১,০০০ ইউয়ান বা ১০,০০০ টাকা। বার্ষিক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, এই আয়ে মাঝারি মাপের কোনও চিনা শহরে মাসিক ভাড়া দিতেই খরচ হয়ে যায়। লিয়ের এই মন্তব্য আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে কোভিড অতিমারী আবহে, যার প্রকোপে চিনা অর্থনীতিতে টালমাটাল অবস্থা তৈরি হয়।