বিশ্বের ৭৫টি রাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়া নোভেল করোনাভাইরাস এবার হানা দিল ভারতের চর্মশিল্পে। চিন থেকে আমদানি করা রাসায়নিক ও আনুসঙ্গিক সামগ্রীর অভাবে মার খাচ্ছে ৩৬,০০০ কোটি টাকার ব্যবসা।কাঁচা চামড়া থেকে রোম সরাতে এবং তা প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রয়োজন হয় সোডিয়াম সালফাইড, যার অন্তত ৫০% আমদানি হয় চিন থেকে, জানিয়েছেন কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েন-এর যুগ্ম সম্পাদক জিয়া নাফিস। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি আমদানি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের গুদামে পচনের মুখে টন টন কাঁচা চামড়া, তিনি জানিয়েছেন।যুগ্ম সম্পাদক বলেন, ‘একদিকে রাসায়নিকের অভাবে ট্যানারিতে কাঁচা চামড়ার স্তূপ জমে পচতে বসেছে, অন্য দিকে উপযুক্ত আনুষঙ্গিক সামগ্রী না পেয়ে কাজ করতে পারছেন না কারিগররা।’তাঁর সঙ্গে সহমত কানপুরের কাউন্সিল ফর লেদার এক্সপোর্টস-এর মধ্যাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান জাভেদ ইকবাল। তাঁর দাবি, ‘চিন থেকে আমদানি করা রাসায়নিকের চরম অভাব দেখা দেওয়ায় আমরা কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াকরণ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি। আর এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে ট্যানারিতে জমা হওয়া কাঁচা চামড়া পচতে শুরু করবে।’ পরিস্থিতির চাপে এখন ইউরোপ থেকে বেশি দাম দিয়ে চামড়া প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক আনানোর পরিকল্পনা করেছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মতে, আগে চিন থেকে প্রতি কেজি ৩৫ টাকায় পাওয়া যেত সোডিয়াম সালফাইড। ইউরোপ থেকে তা আমদানি করতে খরচ পড়ছে কেজিপ্রতি ৮০ টাকা, অর্থাত্ দ্বিগুণের চেয়েও বেশি খরচ।একই জুতো তৈরি করতে দরকারি বোতাম, জিপার, পুলার বা আঠার মতো প্রায় ৬৪টি উপকরণ এতদিন চিন থেকেই আমদানি করা হত। সেই ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ হওয়ায় ইউররোপীয় দেশগুলি থেকে তা সংগ্রহ করতে গিয়ে কয়েক গুণ বেশি মূল্য দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ইকবালের।শুধু তাই নয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে ভারতে তৈরি চর্মজাত পণ্য চিন, জার্মানি, ইতালি ও আমেরিকার বিভিন্ন বন্দরে অনির্দিষ্ট কালের জন্য আটকে পড়েছে বলে জানালেন জিয়া নাফিস।ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে ইতালিতে মাল পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু গত ১০ দিন ধরে সিলামের ম্যালপেনসা বিমানবন্দরে তা আটকে রয়েছে। গ্রাহক জানিয়েছেন, পণ্য সংগ্রহ করতে তিনি বিমানবন্দরে পৌঁছতে পারছেন না। মাঝাখান থেকে বিমানবন্দরে মাল রাখার খরচা গুনতে হচ্ছে আমাকেই।’