করোনাভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত, অক্সিজেনের আকাল - কার্যত যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে দিল্লি। দ্বিতীয় দফায় ছ'দিনের লকডাউনেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে লকডাউনের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে দিল্লি সরকার। গত মাসে দিল্লিতে যেভাবে পজিটিভিটি রেট (সংক্রমণের হার) বেড়ে গিয়েছিল, তাতে লাগাম টানতে লকডাউনের ঘোষণা করেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সেই সময় কিছুটা সংক্রমণের হার কমলেও পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক ছিল। সেজন্য লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী ৩ মে সকাল সাতটা পর্যন্ত করেছিলেন কেজরিওয়াল। তাতে অবশ্য কোনও কাজ হয়নি। বরং আবারও সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশের গণ্ডি ছাড়িয়ে যায়। গত শুক্রবার দিল্লিতে ২৭,০৪৭ জন নয়া আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল। মৃত্যু হয়েছিল ৩৭৫ জনের। তার ফলে বৃহস্পতিবারের তুলনায় দৈনিক আক্রান্ত বেড়েছিল ২,৮১২। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সংক্রমণের হার ছিল ৩১.৭৬ শতাংশ। শুক্রবার তা ০.৯৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তবে মৃতের সংখ্যা কমেছিল। পাশাপাশি টানা ১৩ দিন নয়া আক্রান্তের সংখ্যা ২০,০০০ ছাড়িয়ে যায়। সেই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে আগামী ১৫ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণার জন্য কেজরিকেও আর্জি জানিয়েছিল একাধিক ব্যবসায়ী সংগঠন। তবে সে পথে হাঁটেননি কেজরিওয়াল। আপাতত লকডাউনের মেয়াদ একমাসের মধ্যে বাড়িয়ে দিয়েছে দিল্লি সরকার। তারইমধ্যে শনিবার সকালে বাটলা হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে আটজন করোনাভাইরাস আক্রান্তের মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্যে একজন ওই হাসপাতালেরই চিকিৎসক ছিলেন। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, যে সংস্থার থেকে অক্সিজেন পাওয়ার কথা ছিল, তাদের থেকে অক্সিজেন মেলেনি। সকাল সাতটা নাগাদ তা সরকার-নিযুক্ত আধিকারিকদের জানানো হয়। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। বেলা ১২ টা ১৫ মিনিট নাগাদ হাসপাতাল পুরোপুরি অক্সিজেনশূন্য হয়ে পড়ে। প্রয়োজনের তুলনায় কম অক্সিজেন দেওয়া হয়েছিল বলেও হাসপাতালের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে। হাসপাতালের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর সুধাংশু বাঙ্কাটা বলেন, 'এটা আটে থামবে না। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে আপনি ঠিক করতে পারবেন না।' মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।