জঘন্য অপরাধের তদন্ত রুখে দেওয়ার গোপন চক্রান্ত চলছে। আর সেজন্যই বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইনের (UAPA) বৈধতা নিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে দাবি করল কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা পেশ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, জঘন্য অপরাধের ক্ষেত্রে যাতে তদন্ত রুখে দেওয়া যায় এবং অভিযুক্তদের জামিন পাইয়ে দেওয়া যায়, সেটার জন্য একটি মহলের তরফে বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইনকে অসাংবিধানিক বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সন্ত্রাসবিরোধী ওই আইনের আড়ালে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন অভিযুক্তরা। সেইসঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়েছে যে সংবিধানের ২১ ধারায় যে অধিকার আছে, তা বেআইনি ক🌊ꦗার্যকলাপ বিরোধী আইনের ফলে লঙ্ঘিত হয় না।
কেন্দ্রীয় সরকার যে হলফনামা পেশ করেছে, সেটা সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া একগুচ্ছ পিটিশনের ভিত্তিতে করতে হয়েছে। যে পিটিশন দাখিল করেছেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) প্রাক্তন ছাত্র উমর খালিদ, ফাউন্ডেশন অফ মিডিয়া প্রফেশনাল এবং বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইনের ধারায় গ্রেফতার হওয়া আরও একাধিক ব্যক্তি। মামলাকারীদের দাবি, ১৯৬৭ সালের বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইনের ৪৩ডি ধারায় জামিন মঞ্জুরের শর্তটি অত্যন্ত কঠোর। ওই ধারার আওতায় নিজে🎃কে নির্দোষ প্রমাণ করার বোঝা চাপানো হয়েছ⭕ে অভিযুক্তের উপরই। তার ফলে তাঁর পক্ষে জামিন পাওয়া দুষ্কর হয়ে ওঠে।
যদিও মামলাকার𓄧ীদের সেই যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সুপ্রিম কোর্টে যে ৬২ পৃষ্ঠার হলফনামা দাখিল করা হয়েছে, তাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়েছে যে বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইনের ৪৩ডি ধারার আওতায় জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও 'সম্পূর্ণ বাধা' নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, 'জামিন মঞ্জুরের জন্য (বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইনের) ৪৩ডি (৫) ধারায় যে পদ্ধতির বর্ণনা করা হয়েছে, তাতে শুধুমাত্র অভিযুক্তের জামিন পাওয়ার অধিকার সীমিত করেছে। সেই ধারার আওতায় মোটেও জামিন পাওয়ার উপর সম্পূর্ণ বাধা আরোপ করা হয়নি।'
কেন্দ্রের দাবি, নিজেদের দোষ ঢাকতে এবং𓃲 জামিন পাওয়ার জন্যই বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইনের সাংবিধানিক বৈধতার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু এরকম আইন তৈরি করতে পারে সংসদ। কারণ মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং জীবনের স্বাধীনতা চূড়ান্ত নয়। সেই প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে একাধিক উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইনের বৈধতা বজায় রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। তুলে ধরা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ও।
ওই হলফনামায় বলা হয়েছে, ‘বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইনের ধারার বিরুদ্ধে মামলা করার ছলে (নিজেদের মামলায়) আদালতের থে🍷কে অন্তবর্তীকালীন নির্দেশ পাওয়ার জন্যই মামলাকারীরা এসব পিটিশন দাখিল করেছেন। নিজেরা যে জঘন্য অপরাধ করেছেন, সেইসব ঘটনার তদন্ত যাতে রুখে দেওয়া যায়ಌ, সেটার জন্য বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইনের ধারার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।’
তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হলফনামার ভিত্তিতে আপাতত সুপ্রিম কো𓆏র্টে কোনও শুনানি হয়নি। বুধবার মামলাটি বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চে ওঠার কথা ছিল। কিন্তু তাঁদের একটি বিশেষ মামলার শুনানি থাকায় সেটা হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে আগামী সপ্তাহে ওই মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।