চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে এবার মহম্মদ ইউনুসের সরকারকে বার্তা দিল ইসকন বাংলাদেশ। এই নিয়ে দু'টি পৃথক বিবৃতি জারি করে♓ বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং সরকারের প্রতি নিজেদের দাবি তুলে ধরেছে ইসকন। এই আবহে ইসকনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, 'আমরা ধারাবাহিক ভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আবেদন করেছি যাতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সাংবিধানিক সুরক্ষা দেওয়া হয়। আমরা চাই যাতে সরকার এবং প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ করে সনাতনীদের উদ্বেগ মেটায়। বাংলাদেশ আমাদের জন্মস্থান। আমরা এই দেশের গর্বিত নাগরিক। আমাদের অনেক আচার্য্যদের জন্ম এই দেশে। আমরা চাই সরকার যাতে এই দেশের প্রতিটি নাগিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় রাখে। আমরা বর্তমান এবং ভবিষ্যতের যেকোনও সরকারের সঙ্গেই সমন্বয়♈ বজায় রাখতে চাই। আমারা চাই যাতে সবাই সব ধর্মের প্রতি সহনশীল হন এবং যে কোনও ধরনের উস্কানি দেওয়া থেকে বিরত থাকেন।'
এরপর অপর এক বিবৃতিতে চিন্ময় প্রভু ইস্যুতে ইসকন বাংলাদেশের তরফ থেকে বলা হয়, 'বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের ম🌸ুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা করছি আমরা এবং বর্মান পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করতে চাই। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সনাতনীদের বিরুদ্ধে যে হামলা চলছে আমরা সেই সব ঘটনারও নিন্দা করছি। আমরা চাই যাতে সরকার সনাতনীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। 'বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটে'র প্রতিনিধি এবং একজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রথম থেকেই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে সরব ছিলেন। তাঁর বাকস্বাধীনতার বিষয়টি বজায় রাখা খুবই প্রয়োজন। তিনি অন্যদের অধিকারের জন্যে মনে যে বল জোগাচ্ছেন, তা সমর্থন করা খুবই প্রয়োজন। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এবং এদেশের সনা🦂তনী সম্প্রদায়ের বিচার প্রাপ্য। সংখ্যালঘুদের প্রতি কোনও ধরনের বৈষম্য আর মেনে নেওয়া হবে না।'
ইসকনের তরফ থেকে আরও বলা হয়, 'সরকারের প্রতি আমাদের দাবি - সনাতনীদের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের সাজা দিতে হবে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এবং দেশের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে। দেশের সব সম্প্রদায়ের মধ্যে যাতে শান্তি বজায় থাকে, তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে পদক্ষে❀প করতে হবে। বাংলাদেশের এক সনাতনী 🀅সংগঠন হওয়ার দরুণ সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং অধিকার রক্ষা করার বিষয়ে আমরা বদ্ধপরিকর।'
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন বর্তমানে 'বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের' ব্যানারে আন্দোলন করছে। সেই জোটের মুখপাত্র করা হয়েছে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে। প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছিল বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সেই সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুও। সেই সমাবেশেই নাকি তিনি ♑বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছিলেন। এই অভিযোগেই চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা꧂ ফিরোজ খান। গত ৩১ অক্টোবর চিন্ময় দাস-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সেই নেতা।
সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমা🐼নবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এরপর তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে অভিযোগ, গতকাল চিন্ময় প্রভুকে কারাগারে ওষুধ দিতে দেওয়া হয়নি পুলিশের তরফে। ধৃত হিন্দু নেতাকে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে হেনস্থা করার অভিযোগও উঠেছে। এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের ঘটনার জেরে বাংলাদেশে সংখ্য়ালঘুদের মধ্য়ে শোরগোল পড়ে যায়। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ এই গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা করেছে। এদিকে চিন্ময় প্রভুর মুক্তির দাবিতে ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় নেমেছেন কয়েক হাজার হিন্দু। এরই মধ্যে প্রতিবাদী বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর হামলার অভিযোগ♊ উঠেছে।
২৬ নভেম্বর চ♈ট্টগ্রামের আদালতে বাইরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে জড়ো হয়েছিলেন চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতা🐲রির প্রতিবাদ জানাতে। সেই জনতার ওপর নির্বিচারে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এই সংঘর্ষে এক আইনজীবী খুন হন। এদিকে বাংলাদেশের হিন্দু সন্ন্যাসীকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-৬।