বাংলাদেশে ফাঁসি দেওয়া হল জেএমবি জঙ্গিকে। ১৭ বছর আগে নেত্রকোনায় বামপন্থী সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচীর দফতরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশের আদালতে এই মামলার শুনানিপর্ব চলে। অবশেষে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিনের (জেএমবি)’র প্রাক্তন সামরিক প্রধান আসাদুজ্জমান চৌধুরীকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ আদালত। একইসঙ্গে বিস্ফোরক আইনের আরও দু’টি মামলায় তাকে ২০ বছর করে এবং একটি মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে দোষীসাবস্ত এই জঙ্গিকে ফাঁসি দেওয়া হয়। এই রাতেই আসাদুজ্জামানের প্রাণদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে ঘোষণা করেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সিনিয়র জেল সুপার মহম্মদ গিয়াসউদ্দিন। তিনি জানিয়েছেন, রাত সওয়া ১টা নাগাদ ওই জঙ্গির দেহ সৎকারের জন্য পুলিশি পাহারায় ময়মনসিংহে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ৮ ডিসেম্বর সকাল ৯টা ৪০ মিনিট নাগাদ বামপন্থী সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচীর নেত্রকোনা জেলা সংসদ দফতরের সামনে হামলা চালায় জেএমবি’র আত্মঘাতী দলের সদস্য আব্দুল্লাহ আল কাফি। আত্মঘাতী বিস্ফোরণে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক খাজা হায়দার হোসেন-সহ নিহত হন ৭ জন। ঘাতক কাফিও ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এই ঘটনায় অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে বাংলা ভাইয়ের নির্দেশে এই হামলার হয়েছিল। সেই হামলার প্রধান দায়িত্বে ছিল জঙ্গি আসাদুজ্জামান চৌধুরী ওরফে পনির। তারপর এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তদের। এই ঘটনায় দোষীসাব্যস্ত করার পর ধৃত আসাদুজ্জমান সহ জেএমবি-র অন্য দুই মাথা সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানি ও আরও তিন জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করে নিম্ন আদালত। নিম্ন আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের আপিল বিভাগের দ্বারস্থ হয় আসাদুজ্জমান। কিন্তু বাংলাদেশ হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে। এর আগেই অন্য মামলায় বাংলা ভাই ও সানির ফাঁসি হয়ে গিয়েছিল। এদিন ফাঁসি দেওয়া হল আসাদুজ্জমানকে।