হরদীপ সিং নিজ্জর খুনের ঘটনায় প্রথম থেকেই ভারতের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে আসছে কানাডা। তবে দিল্লিও দাবি করে এসেছে, এই মামলায় দিল্লির হাতে কোনও প্রমাণ তুলে দেয়নি জাস্টিন ট্রুডোর সরকার। এরই মাঝে এই মামলার জেরে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এই আবহে এবার ট্রুডোর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক কানাডায় নিযুক্ত থাকা ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় ভর্মা। সম্প্রতি সঞ্জয়কে দেশে ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দিয়েছে ভারত। এহেন সঞ্জয় দাবি করলেন, 'নিজ্জর খুনে ভারত যোগ থাকার এক কোণা প্রমাণও দেয়নি জাস্টিন ট্রুডোর সরকার।' সঞ্জয়ের আরও দাবি, রাজনৈতিক কারণেই ভারতের ঘাড়ে এই দোষ চাপাচ্ছেন ট্রুডো। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর জেরেই দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বলেও দাবি করেন ভারতীয় কূটনীতিবিদ। (আরও পড়ুন: 𝐆'এটা খুন', শব্দবাজিতে মৃত্যু মহুয়ার উদ্ধার করা কুকুরের, পুলিশকে তোপ TMC সাংসদ⛦ের)
আরও পড়ুন: ৭০ উ🐽ড়ানে বিঘ্ন🅺 উড়ো বার্তায়, সবচেয়ে বেশি হুমকি কোন সংস্থার বিমানকে?
আরও পড়ুন: দিল্লিতে CRPF স্কু🀅লের সামনে বোমা বিস্ফোরণℱ, ভাঙল দেওয়াল, ক্ষতিগ্রস্ত দোকান-গাড়ি
কানাডার সংবাদমাধ্যম সিটিভি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় ভর্মা বলেন, 'যে অভিযোগ 🥂করা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও তথ্যপ্রমাণ তো আমাদের দেখতে হত। তার ভিত্তিতে না আমরা কানাডার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতাম। তবে এটা দুর্ভাগ্যজনক যে কানাডা সরকার একটাও কোনও প্রমাণ দেয়নি।' সঞ্জয় বলেন, ꧃'ভারত আইন মেনে চলা দেশ। কানাডার আদালতে যদি কোনও প্রমাণ গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে তা ভারতের আদালতেও গ্রহণযোগ্য হবে। তবে কানাডার আধিকারিকরা তো আমাদের সেই ক্ষেত্রে সাহায্য করেননি।' এদিকে নিজ্জরের খুন নিয়ে সঞ্জয় বলেন, 'যেকোনও খুনই দুর্ভাগ্যজনক এবং জঘন্য। আমি এই খুনের নিন্দা জানাচ্ছি। আমি এর আগেও বলেছি, এই ঘটনার মূলে যেতে হবে আমাদের।'
এদিকে দাবি করা হয়, গত ৮ অক্টোবর কানাডার অফিসাররা ভারতে আসতে চেয়েছিলেন নিজ্জর খুনের 'প্রমাণ' তুলে ধরার জন্যে। এই নিꦦয়ে সঞ্জয় ভর্মা বলেন, 'এই সব ক্ষেত্রে ডেলিগেশনের ভিসা অ্যাফিক্স করতে হয়। এই ধরনের সরকারি দলকে অন্য দেশে যেতে হলে একটি অ্যাজেন্ডা থাকতে হয়। তবে তাদের তো কোনও অ্যাজেন্ডা ছিল না। কোনও অ্যাজেন্ডার বিষয়ে তারা আমাদের জানায়নি। আর তারা এমন সময়ে আমাদের অ্যাজেন্ডা জানায়, যখন তাদের বিমান টেকঅফ করে চলে গিয়েছে। আমার মনে হয়, ইচ্ছে করেই তারা এটা করেছে। তারা জানত যে এভাবে আধঘণ্টা, এক ঘণ্টায় ভিসা ইস্যু করা যায় না। এটা প♋ুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আমার নে হয়।'
কে ছিল হরদীপ সিং নিজ্জর?
উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালের ১৮ জুন গুরুদ্বারের ভেতরেই গুলি করে হত্যা করা হয় খলিস্তানপন্থী জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরকে। হরদীপকে ২০ বারেরও বেশি গুলি করা হয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের পঞ্জাবি অধ্যুষিত সারে অঞ্চলে থাকত হরদীপ। বিগত কয়েকবছরে কানাডার ভ্যানকুবারে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে খলিস্তানি বিক্ষোভের নেপথ্যে ছিল এই হরদীপ। কানাডায় মৃত হরদীপের বিরুদ্ধে এনআইএ-র চারটি মামলা ছিল। এক হিন্দু পুরোহিতকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র সহ খলিস্তানি যোগের অভ𒆙িযোগ তার বিরুদ্ধে। এই আবহে হরদীপ নিজ্জরের মাথার দাম ১০ লক্ষ টাকা ধার্য করেছিল এনআইএ। জানা যায়, হরদীপ খলিস্তান টাইগার ফোর্সের প্রধান ছিল। গুরপতবন্ত সিং পান্নুনের 'শিখস ফর জাস্টিস' সংগঠনের মতাদর্শ প্রচারের দায়িত্ব ছিল হরদীপের টাইগার ফোর্সের ওপর।
ভারত-কানাডা কুটনৈতিক দ্বন্দ্ব
এদিকে সম্প্রতি কানাডায় নিযুক্ত হাই🎉কমিশনার সঞ্জয় বর্মা-সহ কয়েকজন ভারতীয় কূটনীতিবিদকে একটি মামলার তদন্তে ‘পারসন অফ ইন্টারেস্ট’ করা হয়। এমনকী তাঁদের জেরা করতে চাওয়া হয়েছিল বলেও দাবি করা হয়েছে একাধিক রিপোর্টে। সূত্রের খবর, খলিস্তানি জঙ্গি নিজ্জরের মামলায় সঞ্জয় ভার্মাদের কাছে কোনও তথ্য থাকতে পারে বলে দাবি করেছিল কানাডা। আর এরপরই কানাডা সরকারের সেই পদক্ষেপে তুমুল ক্ষোভপ্রকাশ করে নয়াদিল্লি। প্রাথমিকভাবে কড়া বার্তা দেওয়া হয়। তলব করা হয় ভারতে কানাডার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার স্টুয়ার্ট রস উইলারকে। এরপর কানাডা থেকে ভারতীয় হাইকমিশনার-সহ বেশ কয়েকজন কূটনীতিবিদকে ফিরিয়ে আনার ঘোষণা করা হয়। আর তারপর ভারতে কানাডার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার-সহ ছয় কূটনীতিবিদকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর কানাডা থেকে ভারতীয় হাইকমিশনার-সহ বেশ কয়েকজন কূটনীতিবিদকে ফিরিয়ে আনার ঘোষণা করা হয়। আর তারপর ভারতে কানাডার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার-সহ ছয় কূটনীতিবিদকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধ๊ান্ত ঘোষণা করা হয়।