উত্তরপ্রদেশ–সহ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের আগে গুরুতর অভিযোগ উঠল মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। নেপথ্যে আইন মন্ত্রকের একটি চিঠি। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র এবং দুই নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার ও অনুপ চন্দ্র পাণ্ডেকে বৈঠকে ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের কর্তারা। আর বিতর্ক বাধে এই বিষয়টি নিয়ে। গত ১৫ নভেম্বর একটি চিঠি যায় নির্বাচন কমিশনে। চিঠিতে বলা হয়, ‘নির্বাচনী সংস্কার ইস্যুতে ১৬ নভেম্বর বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সচিব পিকে মিশ্র। সেই বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত থাকবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা।’ নির্বাচন কমিশনের মতো স্বাধীন সংস্থার প্রধানকে কীভাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক আমলা ডেকে পাঠাতে পারেন, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।জানা গিয়েছে, এই বৈঠকের মূল বিষয় ছিল, সব নির্বাচনের জন্য একটিই ভোটার তালিকা ব্যবহার। যা বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও বটে। প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার এস ওয়াই কুরেশির মতে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সাংবিধানিক সংস্থা। এভাবে তাঁদের বৈঠকে ডাকতে পারে না প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ডাকা বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র। অংশ নেন তাঁর দুই ডেপুটি কমিশনার রাজীব কুমার ও অনুপ চন্দ্র পাণ্ডেও। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে গোটা দেশে। এই অনৈতিকভাবে নির্বাচন কমিশন কর্তাদের ডেকে নরেন্দ্র মোদী সরকার ইডি–সিবিআইয়ের মতো এমন সাংবিধানিক সংস্থাকেও ধ্বংস করতে চাইছে বলে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘পিএমও সংবিধান স্বীকৃত একটি সংস্থার প্রধানকে সমন পাঠালো কিভাবে? অবাধ নির্বাচন হবে তো?’ নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, এই ধরনের বৈঠক ডাকা নিয়ে নিজের অসন্তোষের কথাও আইনমন্ত্রককে জানান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। প্রাথমিকভাবে, নির্বাচন কমিশনের অন্য অফিসাররা অনলাইন বৈঠকে যোগ দিলেও এড়িয়ে যান তিন কমিশনার। যদিও তার ঠিক পরেই প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সচিব পিকে মিশ্রের সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনায় বসেন তিন কমিশনার।যদিও এই ঘটনা নিয়ে মোদী সরকারের সাফাই, নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যেই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার টি এস কৃষ্ণমূর্তি বলেন, ‘কোনও আমলার ডাকা বৈঠকে থাকার প্রয়োজন পড়ে না নির্বাচন কমিশনের কমিশনারদের। যদি কিছু জানতেই হয়, কমিশনের কাছে লিখিতভাবে জানতে চাইতে পারে সরকার। এটা পদ্ধতি নয়।’