ঝাঁ চকচকে দোকান। অল্প কিছু জিনিস কিনে নিয়ে কাউন্টারে গেলেন। জিনিসের দাম হিসাব করেই সবার আগে প্রশ্ন, 'স্যার আপনার ফোন নম্বর?' এরপরেই শুরু হয় মেসেজের বন্যা। নিত্যনতুন অফারের মেসেজে ভরে যায় ইনবক্স। মুদি দ্রব্য থেকে জামাকাপড়, কেনাকাটা করে সকলেরই প্রায় এই অভিজ্ঞতা হয়েছে। কিন্তু এমনটা কেন হবে? ফোন নম্বর তো ব্যক্তিগত বিষয়। বিল তৈরি করতে হলে সেটা দিতে হবে কেন? এই দিকেই এবার নজর দিল কেন্দ্র। কনজিউমার অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রকের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এই জাতীয় অভ্যাস অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। গ্রাহকদের নম্বর দিতে বাধ্য করা যাবে না। শুধুমাত্র গ্রাহকরা সম্পূর্ণ রূপে রাজি হলে, তবেই তাঁদের যোগাযোগের তথ্যাদি নেওয়া যাবে।কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা সচিব রোহিত কুমার সিং বলেন, এই বিষয়ে প্রচুর অভিযোগ এসেছে। আর সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কোনও বিক্রেতা যদি ক্রেতাদের ফোন নম্বরের জন্য জোর করতে থাকেন, তাহলে সেটি 'অনায্য ব্যবসায়িক কার্যাবলী'র অধীনে ধরা হবে। গ্রাহকরা যদি এমন বিক্রেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান, সেক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।তিনি জানান, অনেক ক্ষেত্রে বিক্রেতারা জানান, গ্রাহকদের ফোন নম্বর না দিলে নাকি বিলই জেনারেট করা যায় না। সিস্টেমই এভাবে তৈরি করে রাখা হয়েছে। এটি অন্যায্য ব্যবসায়িক কার্যক্রম। এটি ক্রেতা সুরক্ষা আইনের আওতায় আসছে।তিনি আরও বলেন, 'এই তথ্য সংগ্রহ করার পিছনে কোনও যুক্তিও নেই। একেবারে সম্পূর্ণ সম্মতি ছাড়া তাদের নম্বর সংগ্রহ করা উচিত্ নয়।'যদিও ভারতে গ্রাহকদের কেনাকাটা করার জন্য তাঁদের মোবাইল নম্বর দেওয়াটা কোথাও বাধ্যতামূলক নয়। তবে বেশিরভাগ সময় তাঁরা যে চাইলে ফোন নম্বর না-ও দিতে পারেন, সেই অপশনটিই দেওয়া হয় না। কেন্দ্রীয় কর্তারা বলছেন, এটি গোপনীয়তা লঙ্ঘণের সামিল। গ্রাহকদের কাছে ফোন নম্বর শেয়ার করা বা না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকা উচিত। তিনি আরও বলেন, সেলসম্যানদের অনেকে অবশ্য দাবি করেছেন কনট্যাক্ট নম্বর ছাড়া বিল তৈরি করতে পারবেন না। কারণ এটি সিস্টেমেই ইন বিল্ট করে বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 'গ্রাহকদের কনট্যাক্ট নম্বর পেতে হলে রিটেল বিক্রেতাদের যে পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে, তা আমরা নির্দিষ্ট করে দেব। যদি কোনও গ্রাহক কেনাকাটার পর বিশেষ পয়েন্ট বা অফারের জন্য নম্বর দিতে রাজি হন, তাহলে সেটি আলাদা ব্যাপার। কিন্তু খালি বিল বানানোর জন্য ফোন নম্বর দিতে জোর করা যাবে না,' এমনটাই বলছেন এক কেন্দ্রীয় আধিকারিক।