উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকায় ধ্বংসলীলা চালিয়েছে তিস্তা। সিকিমের তিন জেলা মঙ্গন( উত্তর সিকিম), পাকিয়ং ও গ্যাংটক( পূর্ব সিকিম) মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। সবথেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে মঙ্গন। এদিকে শিলিগুড়ি থেকে সিকিম পর্যন্ত গিয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এই পথে শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটকগামী বাসও যায়। পর্যটকবোঝাই গাড়িও ছোটে এই পথেই। কিন্তু সেই রাস্তার অন্তত তিনটি জায়গায় মারাত্মকভাবে ধসে গিয়েছে।আটকে পড়েছেন পর্যটকরাও।ট্য়ুর অপারেটর অভিনন্দন ঘোষ হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানিয়েছেন, কোনও পর্যটক সমস্যায় পড়লে আমরা গ্যাংটকে থাকার ব্যবস্থা করছি।এদিকে সিকিমগামী রাস্তার কিছু জায়গায় ছোট ধস তো রয়েছেই। সেক্ষেত্রে ওই রুটে গ্যাংটক যাওয়াটা এখন চিন্তার। এবার বিকল্প রুটের ভাবনা। কিন্তু বিকল্প রুটে যেতে হলে সময় অনেকটা বেশি লাগবে। মানে সাধারণত সিকিম যেতে গেলে রাস্তা ভালো থাকলে সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টায় যাওয়া যায়। তবে সেই রাস্তা খারাপ থাকায় এবার বিকল্প রুটে গ্যাংটক পাড়ি দিচ্ছেন কয়েকজন। অর্থাৎ গরুবাথানা, লাভা, রংপো হয়ে গ্যাংটক। কিন্তু সেই রাস্তায় সব মিলিয়ে ঘণ্টা দশেক সময় লেগে যেতে পারে । প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্য়ে এই বিকল্প পথে ঝুঁকি কিছু কম নেই।এদিকে আগে থেকে যাঁদের গ্যাংটক যাওয়ার কথা ছিল তারা এখন অনেকেই ট্যুর কাটছাঁট করে ডুয়ার্সে চলে যাচ্ছেন। অনেকে আবার অতি উৎসাহী যারা বৃহস্পতিবার এনজেপিতে নেমে পড়েন তাঁরা গ্যাংটক যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ৯ ঘণ্টা রাস্তা পেরিয়ে গ্যাংটকে যাওয়াটা ঝুঁকির। তাছাড়াও গাড়ি ভাড়াও বেশি । সেই সঙ্গেই চালক সেদিন আর ফিরে আসতে পারবেন না। কারণ পাহাড়ি রাস্তায় রাতে গাড়ি চালানোটা ঝুঁকির।তবে সিকিমকে আবার আগের রূপে ফিরিয়ে আনাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। চুংথাম ড্যাম ভেঙে চুরমার। আগের আর এখনকার ছবির মধ্যে আকাশ আর পাতাল ফারাক। একেবার তছনছ হয়ে গিয়েছে উত্তর সিকিম। সিকিম থেকে সিংহভাগ গাড়ি আর আসতে পারছে না। হাতে গোনা কয়েকটি গাড়ি বহু ঘুরে শিলিগুড়িতে নামতে পেরেছে। মূলত শিলিগুড়িতে যাদের থাকার জায়গা রয়েছে তারা শিলিগুড়িতে নামার চেষ্টা করছেন।এদিকে ৩ হাজারেরও বেশি পর্যটক উত্তর সিকিমের লাচেন এবং লাচুং সহ সংলগ্ন এলাকায় আটকে পড়েছেন। এই এলাকায়গুলি মাঙ্গন জেলার অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে তাঁদের শিলিগুড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসাটাই এখন বড় চ্য়ালেঞ্জ। তবে এবার পুজোয় অনেকেরই সিকিমে যাওয়ার কথা ছিল। তাঁদের আবার অন্য ট্যুরপ্ল্যান ভাবতে শুরু করেছেন। তবে একাধিক পর্যটন সংস্থার দাবি, পুজোর এখনও কিছুটা দেরি রয়েছে। পাহাড়ি পথে ধস নতুন কিছু বিষয় নয়। তবে এবার একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।