আজ সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি বৈধতা নিয়ে রায়দান করল শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ। এর আগে মে মাসে এই মামলার রায়দন স্থগিত রাখা হয়েছিল। আজ অবশেষে সেই মামলার রায়দান করা হল। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি আজ জানিয়ে দিলেন যে রূপান্তরকামী কোনও পুরুষ যদি মহিলাকে বিয়ে করতে চান, বা রূপান্তরকামী কোনও মহিলা যদি পুরুষকে বিয়ে করতে চান, তাহলে তাঁরা তা করতে পারবেন। যে সাংবিধানিক বেঞ্চের তরফে এই রায়দান করা হয়েছে তাতে আছেন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কৌল, বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাট, বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি পিএস নরসীমা। এর আগে ১০ দিনের শুনানির পর গত ১১ মে রায়দান স্থগিত রেখেছিল শীর্ষ আদালত। আজ তৃতীয়ায় ঐতিহাসিক এই রায় ঘোষণা করল সাংবিধানিক বেঞ্চ। (আরও পড়ুন: 'শহুরে ধারণা নয় সমকামিতা… বিয়েকে অপরিবর্তনীয় প্রতিষ্ঠান বলা ভুলꦕ', যা বললেন CJI)
এর আগে মামলাকারীদের দাবি ছিল, স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের আওতায় সমলিঙ্গে বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। তাঁদের হয়ে মামলা লড়েন মুকুল রোহতগি, অভিষেক মনু সিংঘভি, আনন্দ গ্রোভার, গীতা লুথরা, মেনকা গুরুস্বামীদের মতো আইনজীবীরা। মামলাকারীরা দাবি করেন, সকলেরই সমানাধিকার পাওয়া উচিত। যদিও সমলিঙ্গের বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রে🐎র বক্তব্য ছিল, সমলিঙ্গে বিয়ের বিষয় নিয়ে একমাত্র সিদ্ধান্ত নিতে পারে সংসদ তথা দেশের আইনসভা। কেন্দ্রের জমা করা হলফনামায় বলা হয়েছিল, 'সমলিঙ্গে বিবাহ আদতে শহুরে অভিযাত একটি ধারণা'। আদালতে কেন্দ্রের যুক্তি, সমলিঙ্গ বিবাহকে স্বীকৃতি দিলে দেশের প্রতিটি নাগরিকের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুনানির সময় সওয়াল জবাব চলাকালীন সলিসিটর জেনারেল এও মন্তব্য করেছিলেন, 'প🍰াঁচজন মেধাবী এবং শিক্ষিত ব্যক্তি' পুরো দেশের হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তুষার মেহতার এহেন মন্তব্যে বেজায় চটেছিলেন শীর্ষ আদালেতর প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারকে। এদিকে মামলার শুনানি চলাকালীন নিজেদের পর্যবেক্ষণে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, 'কে পুরুষ, কে মহিলা, তা শুধুমাত্র যৌনাঙ্গ দিয়ে বিচার করা যায় না।'
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এক ঐতিহাসিক রায়দানের মাধ্যমে সমকামী সম্পর্ককে অপরাধমুক্ত বলে ঘোষণা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ব্রিটিশ জমানার বহু পুরোনো আইনকে প্রত্যাহার করে পাঁচ সদস্যের বিচারপতিদের বেঞ্চ জানিয়েছিল, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার আওতায় দু'জনের পূর্ণ সম্মতিতে সমকাম সম্পর্ক অপরাধ নয়। সেই পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে ছিলেন দেশের বর্তমান প্রধান বিচারপতি ড⛎িওয়াই চন্দ্রচূড়ও। তবে সমকামী সম্পর্ক বৈধ হলেও ভারতে সমকামী বিয়ের আইনি বৈধতা ছিল না এতদিন ধরে। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন এক✱টি বেঞ্চ নির্দেশনা জারি করে, বিভিন্ন হাই কোর্টে সমকামী বিবাহ সংক্রান্ত যাবতীয় পিটিশন মুলতুবি করে তা শীর্ষ আদালতে পাঠানো হোক। সেই মতো শীর্ষ আদালতে মে মাসে ১০ দিন শুনানি চলে। পরে মামলার রায়দান স্থগিত রাখা হয়।