গতকাল দুপুর নাগাদ মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে গিয়ে পৌঁছায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। হিংসা কবলিত এই রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই সেখানে যান ডেরেক ও'ব্রায়েন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষদস্তিদার, দোলা সেন, সুস্মিতা দেবরা। গতকাল কুকি অধ্যুষিত পাহাড়ি অঞ্চলের বেশ কয়েকটি 💃ত্রাণ শিবিরে যান তৃণমূল সাংসদরা। এদিকে মৈতৈ অধ্যুষিত ইম্ফলেরও বেশ কয়েক ত্রাণ শিবির ঘুরে দেখেন তৃণমূল নেতারা। ত্রাণ শিবিরের 'অব্যবস্থা' নিয়ে অভিযোগ করেন তৃণমূল প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, ত্রাণ শিবিরে শিশুদের থাকার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। মণিপুর ꦬসফর শেষে প্রতিনিধি দলের তরফে রিপোর্ট তুলে দেওয়া হবে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে।
এদিকে গতকাল মণিপুরের রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তৃণমূল প্রতিনিধি দলের। জানা গিয়েছে, তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ পরিস্থিতির বিষয়ে আꦐলো𒆙চনা করেন তিনি। পাশাপাশি তৃণমূল প্রতিনিধি দলকে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করার আশ্বাসও নাকি দিয়েছেন রাজ্যপাল। এদিকে গতমাসে মণিপুরে গিয়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায় যেতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলকে মণিপুরে এখনও কোথাও বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। এদিকে আজ সকালে কিছু সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তৃণমূল প্রতিনিধি দলের। পরে আজ বিকেলে কলকাতায় ফিরবেন ডেরেক, কল্যাণরা।
উল্লেখ্য, মণিপুরের জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ হল মৈতৈ। তবে সেই রাজ্যের মাত্র ১০ শতাংশ এলাকায় তাদের বাস। মূলত ইম্ফল উপত্যকাতেই মৈতৈরা থাকে। এদিকে সম্প্রতি মৈতৈরা দাবি তোলে যে তাদেরও তপশিলি উপজাতিভুক্ত করতে হবে। এই নিয়ে মামলা হয় আদালতে। এদিকে মৈতৈদের এই দাবির বিরোধিতায় রাস্তায় নামে কুকি জনজাতির ছাত্র সংগঠন। তাদের দাবি, রাজ্যের সংখ্যাগুরুরা যদি সংরক্ষণের আওতায় চলে আসে, তাহলে এই ধরনের সংরক্ষণের কোনও অর্থ নেই। এই আবহে গত ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি 🎶জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত এপ্রিল মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাꦛস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে আদিবাসী বনাম মৈতৈদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও। আর এখনও পর্যন্ত সেই হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১৫০ জন মানুষ।