গোটা দেশের পতন হয়েছে তালিবানের সামনে। তবে প্রতিরোধ দেখা গিয়েছে সাধারণ আফগানের মধ্যে। অনেকেই বলছে সেই প্রতিরোধের সাহস আদতে জাগিয়ে তুলেছে পঞ্জশির প্রতিরোধ। তাজিকিস্তানে নিযুক্ত আফগান রাষ্ট্রদূত জাহির আঘবরের দাবি, তালিবানের বিরুদ্ধে শক্ত ঘাঁটি হয়ে উঠবে পঞ্জশির।পঞ্জশিরের অর্থ, পাঁচটি সিংহ। বলা বয় দশম শতকে এই প্রদেশে পাঁচ ভাই মিলে বন্যার জল ধরে রেখেছিল একটি বাঁধ তৈরি করে। সেখান থেকেই এই প্রদেশের নাম পঞ্জশির হয়। সুলতাম মাহমুদ ঘজনির জন্যে সেই বাঁধ তৈরি করা হয়েছিল বলে কথিত আছে। সেই পাঁচ ভাইয়ের সম্মানে এই প্রদেশের নাম পড়ে পঞ্জশির। এই এলাকাতে মোট এক লক্ষ মানুষের বাস। এই প্রদেশের অধিকাংশ মানুষ তাজিক। এই প্রদেশ প্রাকৃতিক একটি দুর্গ। চতুর্দিকে হিন্দুকুশের পর্বত। মাঝে একটুকরো সমতল। এই কারণেই তালিবান এই এাকায় এখনও ঢুকতে পারেনি।১৯৯৬-এ যখন গোটা আফগানিস্তান প্রায় তালিবানদের দখলে, তখনও পঞ্জশিরে নিজেদের আধিপত্য ধরে রেখেছিলেন স্থানীয় নেতা তথা ভারত-বন্ধু হিসেবে পরিচিত আহমেদ শাহ মাসুদের বাহিনী। মাসুদকে বলা হত পঞ্জশিরের সিংহ। তালিবান ও আল-কায়দার বিরুদ্ধে বারবার গলা তোলায় ২০০১ সালে ওসামা বিন লাদেনের নির্দেশে আল-কায়দা জঙ্গিদের হাতে খুন হতে হয় তাঁকে। কিন্তু তার পরেও পঞ্জশির দখল করতে পারেনি তালিবান। বরং, মার্কিন সেনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে আফগানিস্তানকে তালিবান মুক্ত করার কাজে হাত লাগিয়েছিল আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদের বাহিনী।সেই পঞ্জশিরই ফের আফগানিস্তানকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। এই পঞ্জশির প্রদেশেই রয়েছেন আফগানিস্তানের স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহর সঙ্গে হাত মিলিয়ে তালিবানদের রুখে দিয়েছে নর্দার্ন অ্যালায়েন্স। আফগানিস্তানের প্রায় ৯৮ শতাংশ দখল করে ফেললেও পঞ্জশিরে ফের আটকে গেল জঙ্গিরা। এমনকী, বুধবার পঞ্জশিরে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের পতাকাও উড়িয়েছে সালেহ-মাসুদ বাহিনী। বেরিয়েছে ব়্যালি। আর এই প্রতিরোধের আগুন ধিক ধিক করে জ্বলতে শুরু করেছে দেশের অন্যত্র।