অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারে অস্থিরতা তৈরি ও সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এনভি রামান্না এবং অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্ট। আর পুরোটাই এন চন্দ্রবাবু নাইডুর নির্দেশে করছেন তাঁরা। এমনই অভিযোগ তুললেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডি। বিচারপতি রামান্না আবার আগামী বছর সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হবেন।শনিবার সন্ধ্যার শেষ লগ্নে একটি সাংবাদিক বৈঠকে সেই অভিযোগ তোলা হয়েছে। পরে সেই মর্মে বিবৃতিও জারি করেছে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার। সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করেনি 'হিন্দুস্তান টাইমস'। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদকে চিঠি লিখে বিস্তারিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন জগনমোহন। তেলুগু দেশম পার্টির প্রধান নাইডুর সঙ্গে বিচারপতি রামান্নার 'নৈকট্য'-এর বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। একইসঙ্গে সরকারের সিদ্ধান্ত এবং বিচারবিভাগের আধিকারিক ও তাঁদের আত্মীয়দের বিরুদ্ধে তদন্তের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের 'প্রতিকূল' অবস্থান নিয়েও সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। চিঠিতে নির্দিষ্ট রায় এবং অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টের বিচারপতিদের নামও উল্লেখ করা হয়েছে।দীর্ঘদিন ধরেই জগমোহনের মন্ত্রী ও তাঁর দলের নেতারা হাইকোর্টের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে আসছেন। তিনটি রাজধানীর পরিকল্পনা-সহ সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দেওয়ায় বিচারপতিদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন তাঁরা। কিন্তু এই প্রথম বিচারবিভাগের উপর সরাসরি আক্রমণ শানিয়েছে জগনমোহনের সরকার।বিবৃতিতে সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, অমরাবতীর 'স্বার্থ' রক্ষা করতে তিনটি রাজধানী তৈরি-সহ অনেক বিষয়ে জগন সরকারের বিরুদ্ধে রিট পিটিশনের আর্জি শুনেছে হাইকোর্ট। পূর্ববর্তী নাইডু সরকারের আমলে অমরাবতীকে রাজধানী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। আপাতত সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০ টি জনস্বার্থ মামলা চলছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।চিঠিতে জগন অভিযোগ করেছেন, চন্দ্রবাবুর দলের পক্ষপাক্ষিত্ব করছে রাজ্যের বিচারবিভাগ। সেজন্য তদন্তে স্থগিতাদেশের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বা অন্যান্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সরকারের বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জিতেন্দ্র কুমার মাহেশ্বরীর মাধ্যমে রাজ্যের বিচারব্যবস্থার উপর প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেন বিচারপতি রামান্না। বিচারপতিদের নাম উল্লেখ করে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ‘হাইকোর্টের বিচারপতিদের রোস্টারে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেন বিচারপতি রামান্না, যাতে গুরুত্বপূর্ণ নীতি এবং নাইডুর স্বার্থে সুরক্ষার বিষয়গুলি বিচারপতি এভি সিশা সাই, বিচারপতি সত্যনারায়ণ মূর্তি, বিচারপতি ডিভিএসএস, সোমায়াজুলু এবং বিচারপতি ডি রমেশ-সহ কয়েকজনের বেঞ্চে দেওয়া হয়।’ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে পাঠানো চিঠির শেষভাগে রাজ্যের বিচারব্যবস্থায় নিরপেক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।বিষয়টি নিয়ে বিচারপতি রামান্নার সঙ্গে প্রাথমিকভাবে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তাঁর সহকারীর ফোনও মেলেনি। তবে বিচারপতি রামান্নার বাসভবনে ফোন করা হলে এক ব্যক্তি ফোন ধরেন। তিনি জানান, বিচারপতি রামান্না বাসভবনে নেই।