আমাদের ত্বককে তরুণ এবং সুস্থ রাখার অসংখ্য উপায় আছে, তা সে কোরিয়ান গ্লাস স্কিন রুটিন হোক বা কিছু পুরনো ঘরোয়া প্রতিকার। এই কারণেই আমাদের অনেকেই এখনও আমাদের ত্বকের জন্য সঠিক সমাধান খুঁজছি। সত্যি বলতে, আমরা অনেক দামি কম্বিনেশন চেষ্টা করেছি, ক্রিম, টোনার, স্নেইল মিউসিন এবং আরও অনেক কিছু যা ব্রণ, তৈলাক্ত ত্বক, শুষ্কতা এবং অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। আর যখন কিছুই কাজ করে না, আমাদের পকেটও খালি হয়ে যায়, এটা সত্যিই হতাশাজনক। এমনই সময় ট্রেন্ডে হাজির কেভম্যান স্কিনকেয়ার।
কেভম্যান স্কিনকেয়ার কী
কেভম্যান স্কিনকেয়ার রুটিন হল একটি অত্যন্ত ন্যূনতম ত্বকের যত্নের রুটিন। এক্ষেত্রে ত্বকের যত্নের কোনও পণ্য বা এমনকি জলের ব্যবহারও করতে হয় না। মনে করা হয়, এইভাবেই আমাদের ত্বক নিজেই নিজেকে নিরাময় করতে এবং সুস্থ থাকতে দেবে। ঠিক যেমন প্রাচীনকালে মানুষ করত যখন তাদের কাছে কোনও আধুনিক পণ্য ছিল না। এই রুটিনটি মেনে চলেই রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন টিকটক স্রষ্টা টিয়া জাখের। অসংখ্য পণ্য ব্যবহার করেও কোনও ফলাফল না দেখে, তাঁর ত্বকের যত্নের জন্য আলাদা করে কিছুই না করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বিশ্বাস করে বসেন যে তাঁর ত্বক প্রাকৃতিকভাবে নিজেকে মেরামত করতে সক্ষম।
প্রথমে দুই সপ্তাহ ধরে এটি ট্রাই করেও, ত্বকে রুক্ষতা এবং অস্থিরতা বজায় ছিল। তবে, তিনি মার্চ মাসে আবার একই কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। পরে তিনি প্রকাশ করেন যে তিনি 'হাইপারকেরাটোসিস' নামক একটি রোগে ভুগছেন। যেখানে তার ত্বক আরও রুক্ষ হয়ে যায়। তা সত্ত্বেও, তিনি এখনও বিশ্বাস করেন যে তাঁর ত্বক ঠিক আছে এবং ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নন। সহজ ভাষায় কেভম্যান রুটিন কোনও বাহ্যিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই ত্বককে তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে দেওয়ার উপর মনোযোগ দেন। কিন্তু এই রুটিন কি আদৌ সঠিক! উঠেছে প্রশ্ন।
বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন
বিশেষজ্ঞদের মতে, কেভম্যান স্কিনকেয়ার রুটিন, যার মধ্যে ত্বককে জল বা কোনও পণ্য থেকে দূরে রাখতে হয়, তা যুক্তিযুক্ত নয়। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ এবং কসমেটোলজিস্ট ডাঃ গীতিকা মিত্তল গুপ্তের মতে, এমনকী বেসিক স্বাস্থ্যবিধিও এড়িয়ে গেলে সংক্রমণ এবং প্রদাহের ঝুঁকি বাড়তে পারে। এই রুটিনটি ভারতীয় ত্বকের জন্য একেবারেই নিরাপদ বা উপযুক্ত নয় কারণ এটি পিগমেন্টেশন, ব্রণ এনে দিতে পারে। ক্লিনজার বা হাইড্রেটিং পণ্যের ব্যবহার না করলে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস করতে পারে।
তাই ত্বকের সমস্যার সমাধান করার জন্য, স্বাস্থ্যবিধি সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করার পরিবর্তে, ডঃ গুপ্তা একটি সাধারণ রুটিন মেনে চলার পরামর্শ দেন। এর জন্য ব্যবহার করতে হয় একটি নন-স্ট্রিপিং ক্লিনজার, ভালো ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিন। উপরন্তু, পুষ্টিকর খাবার, যেমন বাদাম, যাতে ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, তা ত্বকের স্বাস্থ্যকে ভিতর থেকে সমর্থন করতে পারে।