গত ২ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ওই মৃত্যুপুরী হয়ে উঠেছিল ওড়িশার বালেশ্বর। রক্তে ভেসেছিল বাহানাগা স্টেশনের আশপাশের এলাকা। সেই বিভীষিকাময় স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেনি দেশবাসি। স্বজন হারানোর কান্না এখনও থামেনি। এখনও বহু দেহ শনাক্ত হয়নি। তবে করমণ্ডলে দুর্ঘটনাগ্রস্ত অনেক পরিবার আশায় রয়েছেন, হয়তো তাদের প্রিয়জন বেঁচে রয়েছেন। এরকমই আশায় ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার হারুর পয়েন্ট কোস্টাল থানার অন্তর্গত মধুসূদন পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬৪ বাড়ি এলাকার বাসিন্দা আব্বাস উদ্দিন শেখের পরিবার। কিন্তু, দুর্ঘটনার ৪২ দিন পর আব্বাসের পরিবারের সদস্যরা জানতে পারলেন, তিনি আর বেঁচে নেই। মঙ্গলবার কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল নিয়ে আসা হয়🤪 আব্বাসের নিথর দেহ। সেখানে ময়নাতদন্তের পর আব্বাসের দেহ তুলে দেওয়া হবে তাঁর পরিবারের সদস্যদের হাতে। একমাত্র সন্তানের মৃত্যুতে কার্যত শোকে পাথর আব্বাসের বাবা-মা।
আরও পড়ুন: বাদ গেল পা, ♍সংসার কীভাবে চলবে? ওড়🐓িশা ট্রেন দুর্ঘটনা, জখম বাংলার বহু পরিযায়ী শ্রমিক
দক্ষিণ ২৪ পরগনার হারুর পয়েন্ট কোস্টাল থানার অন্তর্গত মধুসূদন পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬৪ বাড়ি এলাকায় যুবক আব্বাস উদ্দিন শেখ। ভিন রাজ্যে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে জোগাড়ের কাজে যাচ্ছিলেন। কিন্তু, ২ জুন ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটে। তবে প্রথমে শত শত মৃতদেহের মাঝে একমাত্র রোজগের ছেলেকে কোনওভাবেই খুঁজে পাচ্ছিল না পরিবার। ফলে তাঁরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন যে আব্বাস বেঁচে রয়েছেন। অবশেষে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে ১ মাস ২২ দিন পর ভুবনেশ্বর হাসপাতাল থেকে আব্বাসের পরিবারের কাছে ফোন আসে যে আব্বাসের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। এরপরেই ভুবনেশ্বরে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা আব্বাস উদ্দিন শেখের দেহ আসেন। সেখান থেকে সোজা কাকদ্বীপ সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল꧑ে যান। তবে এমন মর্মান্তিক ঘটনায় পরিবারে নেমেছে শোকের ছায়া।
শোকে মর্♊মাহত আব্বাসের বাবা এবাদুল শেখ। তিনি বলেন, ‘আমরা জানতাম ছেলে বেঁচে আছে। ক꧟িন্তু এখন জানতে পারলাম ছেলে আর নেই। আমাদের আশা পূর্ণ হল না। আমার স্ত্রী ছেলের শোকে পাগল হয়ে গিয়েছে। আমাদের ওর দেহ নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করব।’ আব্বাসের পিসতুতো ভাই ওহীদুল লস্কর বলেন, ‘আমরা সকলেই জানতাম আব্বাস বেঁচে আছে। কিন্তু ও যে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে তা আমরা ভাবতেই পারিনি। বাড়ির একটাই ছেলে চলে গেলে বাড়ির লোক কী আর ভালো থাকতে পারে! বড়ই মর্মান্তিক ঘটনা।’
উল্লেখ্য, গত ২ জুন শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বালেশ্বর স্টেশনে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। শালিমার থেকে চেন্নাইগামী ট্রেনটি বাহানাগা স্টেশনের লুপ লাইনে ঢুকে পড়ার ফলে ঘটে বিপত্তি। ওই লাইনে থাকা একটি মালগাড়ির সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে করমণ্ড🍷𒐪লের। ট্রেনের ইঞ্জিন মালগাড়ির উপর উঠে যায় । ঘটনায় ১৫টি বগি খেলনা গাড়ির মতো ছিটকে পড়ে। ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এই মারাত্মক দুর্ঘটনায়।