উত্তরবঙ্গে হাতি মৃত্যুর জেরে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তিনি চা–বাগানের সহকারী ম্যানেজার। চা–বাগানে যে হাতিটি মারা গিয়েছিল, মাসখানেক সে তড়িতাদহ হয়ে পড়েছিল। কারণ হাতিটি স্পর্শ করেছিল ১১ কেভি বিদ্যুতের লাইন। যার ফলে এই ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু সেদিকে খেয়াল রাখলে এই ঘটনা এড়ানো যেত বলে পুলিশের দাবি।এই ঘটনায় বন দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, চা–বাগানগুলির কাছে কড়া বার্তা গেল এই গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু তাতেই এখন জ্বলে উঠল ডুয়ার্স। কড়া বার্তা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়ে গিয়েছেন পুলিশ এবং বন দফতর। কারণ এই গ্রেফতারের ঘটনা কেউ মেনে নিতে পারছেন না।অন্যদিকে হাতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ ডুয়ার্স। চা–বাগানের সহকারী ম্যানেজারের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শ্রমিকদের। তাঁদের দাবি, এলাকায় হাতির উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ বন দফতর। সহকারী ম্যানেজারকে গ্রেফতার করার জন্য বন দফতরের আধিকারিকদের ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হবে।ইতিমধ্যেই ধৃতকে পাঁচদিনের বন দফতরের হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঘটনাটি ঘটেছে বানারহাটে। ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত রাজ্যে ৪৭ টি হাতি তড়িতাদহ হয়ে মারা গিয়েছে। তার মধ্যে ২২টি দক্ষিণবঙ্গে এবং ২৫টি উত্তরবঙ্গে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগে বানারহাটের হলদিবাড়ি চা বাগানে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে মারা যায় একটি পূর্ণবয়স্ক হাতি। বন দফতরের অভিযোগ, ওই চা–বাগানের নিজস্ব বিদ্যুতের লাইনটি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। তার জেরেই হাতিটি বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে মারা গিয়েছে।এই গাফিলতির অভিযোগে হলদিবাড়ি চা–বাগানের সহকারী ম্যানেজারকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে দিনভর বানারহাট হিন্দি কলেজের সামনে পথ অবরোধ করেন চা–বাগানের শ্রমিকরা। তাতেও কাজ না হওয়ায় শেষপর্যন্ত স্থানীয় মরাঘাট চৌপতি এলাকায় জাতীয় সড়কে শুরু হয় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ, অবরোধ। এই সহকারী ম্যানেজারের নাম উদয় নিওয়ার।এই বিষয়ে অতিরিক্ত মুখ্য বনপাল ভিকে সুদ বলেন, ‘এই বিষয়ে বহুবার নোটিস দেওয়া হয়েছিল চা–বাগান কর্তৃপক্ষকে। সেখানে বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। তার জেরেই হাতি মারা গিয়েছে। আমরাও তাই পদক্ষেপ করেছি।’ হাতির মৃত্যুতে জামিনের আবেদন জানিয়ে জলপাইগুড়ি সিজেএম আদালতের দ্বারস্থ হন হলদিবাড়ি চা–বাগানের অভিযুক্ত ম্যানেজার। কিন্তু জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তাকে পাঁচদিন বনদফতরের হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।