সাম্প্রদায়িক হিংসায় উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করে গতরাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দেগে তিনি কয়েকটি ভিডিয়োও পোস্ট করেছেন হিংসার। যদিও সেই সব ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্তর অভিযোগ, বেলডাঙায় নাকি বাংলাদেশের কায়দায় 'হিন্দু নিধন' চলছে। সেখানে হিন্দুদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই আবহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সুকান্ত প্রশ্ন করেন, পশ্চিমবঙ্গকে কি বাংলাদেশ বানানোর পরিকল্পনা চলছে?নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে সুকান্ত গতকাল লেখেন, 'সাম্প্রদায়িক মুখ্যমন্ত্রীর নির্লজ্জ তোষণের রাজত্বে গভীর রাতেও জ্বলছে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা। বাংলাদেশের কায়দায় চলছে হিন্দু নিধন যজ্ঞ! দিকে দিকে নিরীহ হিন্দুদের বেছে বেছে মারধর, বাড়িতে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজি চলছে। এমনকি বাড়িতে বলপূর্বক ঢুকে নিরীহ মহিলাদেরও দেওয়া হচ্ছে প্রাণনাশের হুমকি! রাজ্যের ব্যর্থ, নির্লজ্জ পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি এসব শুনে শান্তিতে ঘুমোচ্ছেন? নাকি সবটাই পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ বানানোর গভীর ষড়যন্ত্র?' এরই সঙ্গে সুকান্ত মজুমদার তিনটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। তার মধ্যে একটি ভিডিয়ো দেখা যাচ্ছে, রাস্তার মাঝখানে আগুন জ্বলছে। সেখানে পড়ে আছে অনেক পাটকেল। যিনি ভিডিয়ো করছেন, তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে - 'পুলিশ প্রশাসন থাকা সত্ত্বেও দেখুন কীভাবে হিন্দু বাড়িতে কীভাবে আগুন জ্বালিয়েছে। কীভাবে ইট পড়ছে। কত ইট পড়ছে দেখুন। একটা গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বাড়ি থেকে বের করে।' এদিকে আরও একটি ভিডিয়োতে দেখা যায়, লাঠি নিয়ে উত্তেজিত কয়েকজন রাস্তয়া ঘোরাঘুলি করছে। সেই সময় লাল পাঞ্জাবি পরিহিত এক ব্যক্তিকে সজোর চড় মারে এক যুবক। আঘাতের চোটে লাল পাঞ্জাবি পরিহিত সেই ব্যক্তি রাস্তায় লুটি পড়েন। আর তৃতীয় ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, সেই লাল পাঞ্জাবি পরিহিত ব্যক্তি একটি শাটারে পিঠ ঠেকিয়ে বসে। তাঁর ঠোঁট কেটে গিয়েছে একদিকে। চোখ আর্ধেক বুজে আছে। এক মহিলার কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে। তিনি বলছেন, দেখুন কীভাবে মেরেছে!এর আগে চলতি বছরেই রামনবমীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদের শক্তিপুর। সেই সময় দাবি করা হয়েছিল, শক্তিপুর হাই স্কুল মোড়ের কাছে রামনবমীর শোভাযাত্রায় দুষ্কৃতীরা হামলা চালানো হয়েছিল। রামনবমীর মিছিলটি যখন একটি মসজিদের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল, তখনই নাকি হামলা চালানো হয়েছিল। সেই সংঘর্ষের জেরে দুই নাবালক, একাধিক পুলিশকর্মী সহ মোট ১৮ জন জখম হয়েছিলেন। জখম ব্যক্তিদের অনেকেরই হাতে এবং পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল বলে জানা গিয়েছিল। জখমদের মধ্যে ছিলেন শক্তিপুর থানার তৎকালীন আইসি। পরে শক্তিপুর ও বেলডাঙার দুই ওসি’কে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।