কাজে দিয়েছে কড়া বিধিনিষেধ। কমেছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ। তাই কার্যত লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়াল রাজ্য সরকার। আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত কড়া বিধিনিষেধ থাকবে। বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এখন যা যা বিধিনিষেধ কার্যকর হচ্ছে, আগামিদিনেও সেগুলি চলবে। কয়েকটি ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ছাড় দেওয়া হয়েছে। মমতা বলেন, 'আপনাদের একটা ধন্যবাদ জানাব, কোভিড কিছুটা হলেও কমেছে। এই যে আমরা বাধানিষেধ জারি করেছি, মানুষ তো এগুলিতে সহযোগিতা করছেন। মানুষ নিজেকেও নিজে রক্ষা করছেন। এর ফলে কিছুটা হলেও কমেছে। যেহেতু কিছুটা হলেও আমরা আর একটু সময় নিচ্ছি। এটার জন্য আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেব।' তবে এতদিন পাটশিল্পে ৩০ শতাংশ কর্মী উপস্থিত থাকতে পারতেন। এবার তা বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে মেনে চলতে হবে করোনা সংক্রান্ত সুরক্ষা-বিধি। একইসঙ্গে করোনাভাইরাস টিকা নিয়ে নির্মাণ শিল্পে কাজ চালানো যাবে। সেক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে যাবতীয় করোনা-বিধি পালন করতে হবে বলে জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি যাতে ধ্বংস না হয়, তাই অর্থনীতি, জরুরি পরিষেবা - যেগুলি চলছে, সেগুলি চলবে। অনলাইনে যা যা চলার চলছে। কারখানাও চলছে, কিছুটা বিধিনিষেধের সঙ্গে।’ তবে সেই বিধিনিষেধকে ‘লকডাউন’ বা ‘কার্ফু’ হিসেবে ব্যাখ্যা করতে নিষেধ করেছেন মমতা। এতদিন কী কী বিধিনিষেধ চলছিল, দেখে নিন -১) স্কুল, কলেজ-সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।২) বন্ধ থাকবে সমস্ত সরকারি-বেসরকারি অফিস। শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত দফতরগুলি খোলা থাকবে।৩) শপিং, মল, মার্কেট কমপ্লেক্স, স্পা, বিউটি পার্লার, সিনেমা হল, রেস্তোরাঁ, সুইমিং পুল, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স বন্ধ থাকবে।৪) সকাল ৭ টা থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত শুধুমাত্র শাক-সবজি, ফল, মুদিখানা, মাংস, ডিম, পাউরুটির সঙ্গে যুক্ত খুচরো দোকান এবং বাজার খোলা থাকবে।৫) সকাল ১০ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মিষ্টির দোকান খোলা থাকবে।৬) বেলা ১২ টা থেকে দুপুর ৩ টে পর্যন্ত সোনা ও শাড়ির দোকান খোলা থাকবে।৭) ওষুধের দোকান, চশমার দোকান সাধারণ সময়মতো খোলা থাকবে।৮) লোকাল ট্রেন বন্ধের মেয়াদ আরও বাড়ল। আগামী ৩০ মে পর্যন্ত রাজ্যে লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে বাস চলাচল। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। কলকাতা মেট্রো চলবে না। সবই রাজ্যের মধ্যে পরিষেবার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।৯) অটো চলাচল বন্ধ থাকবে। ট্যাক্সি, অ্যাপ ক্যাব চলাচল বন্ধ থাকবে। কার্যত সবরকমের গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকছে। শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত গাড়ি, চিকিৎসা, সংবাদমাধ্যম, হাসপাতাল, ক্নিনিক, টিকাকরণ কেন্দ্র, বিমানবন্দর থেকে গাড়ি, টার্মিনাল পয়েন্ট থেকে গাড়ি চলাচল করতে পারবে।১০) রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক - সবরকম জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা।১১) ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে। তবে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত কাজ চলবে। এটিএম পরিষেবা মিলবে।১২) চা বাগানে ৫০ শতাংশ কর্মী উপস্থিত থাকতে পারবেন। জুটমিলে কর্মী উপস্থিতি সর্বাধিক ৩০ শতাংশে বেঁধে রাখা হচ্ছে। জুটমিলে তা বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হল এবার।১৩) পেট্রল পাম্প, অটো রিপেয়ার দোকান, এলপিজি গ্যাসের দোকান এবং বণ্টন দোকান খোলা থাকবে।১৪) বিয়েবাড়িতে সর্বাধিক ৫০ জন উপস্থিত থাকতে পারবেন।১৫) সৎকারে সর্বাধিক ২০ জন থাকতে পারবেন।১৬) রাত ন'টা থেকে সকাল পাঁচটা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে সবরকম গতিবিধিতে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।