চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। ভরসা একমাত্র এমার্জেন্সির আলো। জলও গোড়ালি ছাড়িয়েছে। তারইমধ্যে 'ক্লান্তিহীনভাবে' এগিয়ে চলেছেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।সেই ঘটনাক্রমগুলি একেবারেই নতুন নয় ‘কান্তি বুড়োর’ কাছে। দৃশ্যগুলি অত্যন্ত পরিচিত সুন্দরবনের মানুষের কাছেও। আয়লা হোক বা আমফান - প্রতিবারই ঘূর্ণিঝড় শিয়রে থাকলেই কাঁধে গামছা, গায়ে ফতুয়া, পায়ে চপ্পল পরে বেরিয়ে পড়েন তিনি। প্রতিবার লক্ষ্য থাকে একটাই, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে বাঁচাতে হবে সুন্দরবনকে। ‘ইয়াস’-এর আগেও সেই অভ্যেসে বিরাম পড়েনি। অথচ সপ্তাহতিনেক আগেই তো ভোটে হেরেছেন। কিন্তু তাতে কী? ভোটের মেশিনে মানুষ ‘কান্তি বুড়োকে' দূরে সরিয়ে দিলেও প্রাক্তন মন্ত্রী মানুষের কাছে যেতে এতটুকুও দ্বিধাবোধ করেন না। তাই তো ঘূর্ণিঝড়ের আগেই চলে আসেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় - ক্লান্তিহীনভাবে, এতটুকুও ‘লজ্জা’ ছাড়াও। সেই ‘লজ্জা’ ছাড়াই ‘ইয়াস’ আছড়ে পড়ার আগের রাতে মাঠে নেমে পড়েন প্রাক্তন বিধায়ক। পাশে এক সঙ্গীকে নিয়ে জল ঠেলে ঠেলে এগিয়ে যেতে থাকেন। ঝড় মোকাবিলায় নিজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা একটা জেটির উপর দাঁড়িয়ে আছি। জেটির উপর এখন প্রায় এক ফুট জল হয়েছে। আরও এক ঘণ্টা ২০ মিনিট জোয়ারটা চলবে। স্বাভাবিকভাবে এক ফুট জল বাড়বে। এখন উত্তর-পূর্ব দিক থেকে হাওয়া দিচ্ছে। কাল (বুধবার) ১০ টা ৪৫ মিনিটে চন্দ্রগ্রহণ। সেই সময় যদি ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার বেগে পূর্ব, উত্তর-পূর্ব বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে হাওয়া দেয়, তাহলে বাঁধ ভাঙবেই। অনেক গ্রামই প্লাবিত হবে।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় কান্তিবাবুর সেই ভিডিয়ো রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। এক নেটিজেন বলেন, ‘ঝড়ের আগে কান্তি আসে।’ সেইসঙ্গে সকালের বাঁধ পরিদর্শনের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে ওই নেটিজেন লেখেন, ‘বামেরা যদি ব্যাক বেঞ্চার হয়ে তাহলে সেই ব্যাক বেঞ্চারের ফার্স্ট বয় আপনি। যিনি চুপিসাড়ে মানুষের পাশে ঝড় , বৃষ্টির আগে হঠাৎ করে উদয় হন ও কাজ করে দিয়ে চলে যান।’