সন্দেশখালি: সন্দেশখালির বেড়মজুর কাছার🎶ি গ্রাম। ঘাট থেকে খানিকটা এগোলেই রাস্তার ডানদিকে রয়েছে একটা স্তম্ভ। যদিও সেটি চোখে পড়ার কথা নয়। গ্রামবাসীরা বলে না দিলে বোঝা যাবে না ওটি তেভাগার শহিদের স্মৃতিতে তৈরি স্তম্ভ। ইট বেরিয়ে রাস্তার একপাশে পড়ে রয়েছে। বাম আমলে তৈরি। তেভাগার সংগ্রামে প্রাণ দেওয়া এলাকার তিন শহিদ রবিরাম, রতিরাম ও চামুবিশালের স্মৃতির উদ্দেশে। ফলকটি খুলে পড়ে যাওয়ায় গ্রামবাসীরা সেটি তুলে অন্যত্র রেখেছেন।
শহিদ বেদিটꦉির পিছনেই একটি ভাঙাচোরা বেড়ার বাড়ি। গ্রামবাসীরা জানালেন, গত পঞ্চায়েত ভোটে বাড়🦩িটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
কারা ভেঙেছে?
জাহাঙ্গির ডাক্তারের লোকেরা।
কে জাহাঙ্গির ডাক্তার?
শেখ শাহজাহানের ভাই।
কেন ভাঙল?
যাদের মনে🦩 হয়েছে একটু অন্য দꦯিকে ঝুঁকেছে, মানে বিজেপির দিকে তাদের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
আরও একটু এগোতেই কিছু জমি দেখিয়ে গ্রামবাসীরা বললেন, 'ওই যে জমিগুলি দেখছেন সব আদিবাসীদের জমি। বা🐼ম আমলে পাট্টা পায় আদিবাসীরা। ওই জমিতে চাষবাস করে খেতেন তারা। ꦕসব জমি দখল নেওয়া হয়েছে ভেড়ি করার জন্য। উচু পাড় দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে জমিগুলিকে।' বিঘের পর বিঘে জমি দখল নেওয়া হয়েছে বলে গ্রামবাসীরা অভিযোগ জানিয়েছেন।
এই ছবিটা সন্দেশখালির প্রায় সর্বত্র। প্রথমে চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে জমিকে নষ্ট করে দেওয়া। তার পর মাছের ভেড়ি করার জন্য জমি লিজ নেওয়া। প্রথম দিকে এক দুবার লিজের টাকা দেওয়া হল। পরে বন্ধ করে দেওয়া হয় লিজের টাকা। প্রতিবা🤡দ জানালে মার খেতে হয়। বাড়ি♈র মেয়েরাও বাদ যায়নি। গ্রামবাসীদের কথায়, এই ভাবেই ফুলে ফেঁপে উঠেছে শেখ শাহজাহান।
সেই শাহজাহানের রাশ আলগা হতেই, গꦯ্রামবাসীরা প্রতিবাদের সরব হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে শাহজাহানের দুই🅠 সহযোগী উত্তম সর্দার ও শিবপদ হাজরার বিরুদ্ধে। বুধবার গ্রামবাসীদের হাতে মারও খেয়েছেন উত্তম সর্দার। তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল একটি ঘরে। পরে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার দিনও ওই দুজনকে গ🔯্রেফতারির দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে সন্দেশখালি থানার সামনে। বাঁশ লাঠি নিয়ে বিক্ষোভ দেখান মহিলারা। যাꦫঁদের অধিকাংশই আদিবাসী। শুধু জমি দখল নয়, আবাস যোজনার বাড়ি তৈরির জন্য এক লক্ষ টাকা করে চাওয়ার অভিযোগ করেন তাঁরা।
এ🐻ই অন্দোলনের জন্য পুরো সন্দেশখালি কার্যত শুনশান। কয়েকটি মোড়ে দেখা গেল গ্রামবাসীরা লাঠি হাতে জমায়েত হয়েছে। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর মঙ্গলবার তৃণমূলের তরফে অবস্থা বিক্ষোভ করা হয়। পরে মিছিল বের করলে, মিছিলকে উদ্দেশ করে ছুটে আসে গ্রামবাসীদের কটুক্তি-হুমকি। মিছিলে এক মহিলার শ্ললতাহানীর চেষ্টা হলেই গ্রামবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিপদ বুঝে 🐟শাজাহানের দলবল পালানোর চেষ্টা করে। অনেকে আবার নদী সাঁতরে পালানোর চেষ্টা করে। উত্তম সর্দারকে আটকেও রাখা হয়।
পড়ুন। সন্দেশখালিতে ফের জ্বলল ক্ষোভের𝐆 আগুন, পুড়ে ছাই TMC নඣেতার মুরগির খামার
তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি ও সিপিএম💃ের মদতে এই সব বিক্ষোভ। গ্রামীবাসীদের কথায়,'শাহজাহান ও তাঁর বাহিনী দপাদাপি আর দুনীর্তিতে সাধারণ মানুষ বিরক্ত। তাঁর সেই ফাঁস থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছেন।'
আন্দোলনে আসা এক মহিলার বলেন, 'আমরাও তো তৃণমূল করি। আমরা দিদিকে দেখে ভোট দিয়েছি। কিন্তু শাহজাহান বাহিনী আমাদের জমি কেড়ে নিয়েছে। আবাস যোজনার বাড়ি জন্য এক লাখ টাকা চায়। আমাদ🅠ের ছেলেগুলোকে নেশা ধরিয়েছে। এ সব দিদি বলে দিয়েছে?'
সন্দেশখালিতে এই বি🐟ক্ষোভ যখন হচ্ছে তখন রাজ্য বিধানসভায় বাজেট পেশ চলছে। স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থ প্রতিমন্ত্রী 𒊎ঘোষণা করছেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ৫০০ থেকে ১০০০ করা। ৫০ দিনের কর্মপ্রকল্প একগুচ্ছ জনমুখী প্রকল্পের। সেই সব প্রকল্পে সন্দেশখালির মতো এলাকায় এসে নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। ফুলে ফেঁপে উঠছে শেখ শাহজাহানদের মতো কিছু লোক। গ্রামীবাসীদের এই আন্দোলন সেটাই স্পষ্ট করছে।