প্রবল বৃষ্টিতে ধস নামল পাহাড়ে। ঘটনায় কালিম্পংয়ের সেবক রংপোর রেল প্রকল্পে মৃত্যু হল এক শ্রমিকের। আহত হলেন দু’জন। এখনও পর্যন্ত পাঁচ জন নিখোঁজ বলে জানা যাচ্ছে। মৌসুমী বায়ু ও নিম্নচাপের জোড়া ফলায় রাজ্যজুড়ে অতিভারী বৃষ্টি হচ্ছে। তাতেই বিপর্যয় ঘটে গেল উত্তরবঙ্গে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে সেবক রুংপো রেল প্রকল্পের টানেল এলাকায়। এদিন ভারী বর্ষণের জেরে এই রেল প্রকল্পের কাছে ধস নামে। সেখানেই সেবক রুংপো রেল প্রকল্পের শ্রমিকদের ক্যাম্প ছিল। ধসের ফলে কাদা মাটির সঙ্গে প্রবল জলের তোড় আছড়ে পড়ে ওই এলাকায়। তার জেরে ভেসে যায় ক্যাম্পটি। সেখানেই বেশ কিছু শ্রমিকরা থাকছিলেন। ঘটনায় এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছ। দু’জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আরও পাঁচ শ্রমিক নিখোঁজ হয়ে যান। ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় থানা ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজে নেমে পড়েছে প্রশাসন। নিখোঁজদের খুঁজতে জলে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এমনকী, স্নিফার ডগও নামানো হয়েছে।রাত থেকে এরাজ্য ও সিকিম সীমানার একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। রংপো, মিল্লির ধস ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। দার্জিলিং থেকে কালিম্পং যাওয়ার রাস্তাতেও ধস নেমেছে। ধসের কবলে পড়েছে দার্জিলিংয়ের সিংমারির নিচে সংটম এলাকাও। ফলে বেশ কয়েকটি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৯ মাইলের কাছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বড় অংশে ধস নামায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে, বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দার্জিলিং ও সিকিম। রাস্তা সংস্কারের কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে চালাচ্ছে প্রশাসন। তবে বৃষ্টির হাত থেকে এখনই রেহাই পাবেন না উত্তরবঙ্গবাসীরা। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, উত্তরের জেলাগুলিতে ক্রমশই বাড়বে বৃষ্টি। আগামী ২৪ ঘণ্টায় আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার এই দুই জেলায় বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার থেকে দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে বৃষ্টি হবে। বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গের নদীগুলির জলস্তর বাড়তে পারে। আরও ধস নামতে পারে। ইতিমধ্যেই ধসপ্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের সুরক্ষিত রাখতে নজরদারি চালানো হচ্ছে। যাতে কোনও প্রাণহানি না ঘটে সেদিকেও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশাসন।প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ১৮ জুন সেবক রুংপোর রেল টানেলে বড়সড় ধস নেমেছিল। সেই ঘটনায় দু’জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। ঘটনায় ৫ শ্রমিক জখমও হয়েছিলেন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও সেই রেল প্রকল্পের শ্রমিকদের উপর বিপর্যয় নেমে এল।