উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। এই আবহে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগেই প্রশ্নপত্র পৌঁছে যাবে পরীক্ষার্থীর হাতে। আর তার জন্য নির্দিষ্ট কিউ আর কোড স্ক্যান করে জমা করতে হবে টাকা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বার্তা পৌঁছে গিয়েছিল বহু উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর কাছে। অভিভাবকরা তা জানতে পেরে পুলিশের কাছে সেই কথা ও নথির স্ক্রিনশট জমা করেন। তাতেই তৎপর হয় পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে এই ঘটনার মাথা এক অল্পবয়সি যুবক। বান্ধবীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টকে হাতিয়ার করে এই প্রতারণাচক্র ফেঁদেছিল সে। ইতিমধ্যেই হাওড়া–কলকাতা মিলিয়ে উচ্চমাধ্যমিকের পঞ্চম দিনে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে মোট ৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়। উলুবেড়িয়ার একটি কেন্দ্র থেকেই উদ্ধার হয়েছে চারটি মোবাইল। চারজন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। কলকাতার নারকেলডাঙার একটি স্কুলে এক পড়ুয়া মোবাইল নিয়ে ধরা 💦পড়ায় তারও পরীক্ষা বা🌺তিল হয়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে পুরুলিয়ার স্কুলে।
এদিকে পুলিশের কাছে প্রশ্নপত্র নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার দু’দিন পরে। অভিভাবকরা এই অ🌄ভিযোগ করেছেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি অধ্যাপক চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বিধাননগর পুলিশের সাইবার সেলে এই বিষয়টি নিয়ে এফআইআর করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, কোনও ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় উচ্চমাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের কাছে টাকা দাবি করছে। যেটা আসলে সত্যি নয়। অর্থাৎ প্রশ্নপত্র আসলে সত্যি নয়। এভাবে প্রতারণা করা হচ্ছে। উচ্চমাধ্যমিকের পঞ্চম দিনে ছিল ফিজিক্স, নিউট্রিশন, এডুকেশন এবং অ্যাকাউন্টেন্সির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পরীক্ষা। তার আগেই এই খবর প্রকাশ্যে আসায় ঢি ঢি পড়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে অভিযোগের সপক্ষে কিছু স্ক্রিনশটও পুলিশকে দেন চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। যা নিয়ে তদন্ত করতে নেমে পুলিশ বুঝতে পারে, টাকার বিনিময়ে উচ্চমাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র দেওয়ার একটা প্রতারণা চক্র সক্রিয়ভাবে চলছে। তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে আসে কিউআর কোড পাঠানো হয়েছে টেলিগ্রামে। দু’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর রয়েছে। তার মধ্যে একটি অ্যাকাউন্ট প্রীতি শর্মার নামে নথিভুক্ত। যিনি নদিয়া জেলার হাবিবপুরের বাসিন্দা। পুলিশ এই তথ্য হাতে পেয়ে প্রীতির সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে, তাঁর এটিএম কার্ডটি সম্প্রতি জোর করেই নিয়ে য🦋ান তাঁর বন্ধু রূপম সাঁধুখা। তার পর থেকে তাঁর অ্যাকাউন্টে অজস্র লেনদেন চলছে।
আরও পড়ুন: জনজ🅷াতি–কুড়মিদের নিয়ে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী,🦋 জেলা সফরের আগে নবান্নে আদিবাসী সংগঠন
পুলিশ এই তথ্য পেয়ে সেই লেনদেনের মেসেꦿজ দেখতে চায়। যা এসেছিল প্রীতির ফোনে। তবে প্রীতি বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর বন্ধু কারও সঙ্গে প্রতারণা করছেন। আর সেই প্রতারণার জেরেই অর্থ তাঁর অ্যাকাউন্টে এসে পড়ছে। কিন্তু এখান থেকে বের হবেন কি করে তা তিনি বুঝতে পারেননি। তবে পুলিশকে কেন জানাননি প্রীতি? এই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। অবশেষে পুলিশের কাছে বন্ধু রূপমের সমস্ত তথ্য তুলে দেন প্রীতি। আর সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করেই নদিয়ার গরিবপুর মাঝের গ্রামের বাসিন্দা রূপমের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় রূপমকে।