ছেলে হারিয়েছেন। তাও কেটে গিয়েছে একটি বছর। দোষীরা অনেকেই জেলে। তবে শাস্তি এখনও হয়নি। উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন চোখে নিয়ে পড়ুয়া এসেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। র্যাগিং করে তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ। তার পর কলকাতার রাজপথে বহু চোখের জল ফেলতে হয়েছে মৃত ছাত্রের বাবাকে। আজ মৃত্যুর একবছর পূর্ণ হল। তাই সামনে বড় ছেলের ছবি নিয়ে পুরোহিতের সাহায্যে মন্ত্রপ🥂াঠ করছেন। চোখের জলে বহু কষ্টে বুকে পাথর রেখে সন্তান হারানো বাবা মন্ত্র উচ্চারণ করে চলেছেন। ছেলের আত্মার শান্তি কামনায় সব নিয়ম মানছেন। একটু দূরে পাথর হয়ে বসে আছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কাণ্ডে মৃত ছাত্রের মা।
এই ছবিই আজ সকলে দেখেছেন। নদিয়া থেকে অনেক স্বপ্ন নিয়ে পড়তে এসেছিলেন ছেলেটি কলকাতায়। কিন্তু সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায় র্যাগিংয়ের ভয়াবহতায়। ২০২৩ সালের ৯ অগস্ট তারিখে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র মেন হস্টেলের দ্বিতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে যায়। তখনই উঠে আসে র্যাগিং তত্ত্ব। এই ঘটনায় এꦉকের পর এক ছাত্র এবং প্রাক্তনী গ্রেফতার হয়েছে। মামলাও চলছে। সোমবার নবদ্বীপের মঠে বৈষ্ণবীয় রীতি মেনে বাৎসরিক কাজ শেষ হ🗹য়। তারপরই মৃত ছাত্রের বাবা বলেন, ‘অভিযুক্তদের পাশাপাশি র্যাগিং ব্যবস্থারও ফাঁসি চাই।’ মৃতের মায়ের কথায়, ‘ও বেঁচে থাকলে দেশের সম্পদ হতো।’
আরও পড়ুন: মুহূর্তের মধ্যে গঙ্গায় তলিয়ে গেল একসঙ্গে ১০টি বাড়ি, সামশেরগঞ্জে আতঙ্কেꦿ বাসিন্দারা
এই ঘটনার পর রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল। পুলিশ, প্রশাসন, আদালত সব দরজায় কড়া নেড়েছেন মৃত ছাত্রের বাবা। তাতে দোষীরা ধরা পড়লেও এখন শাস্তি হয়নি। অথচ একবছর কেটে গেল। 𝐆তাই আজ শোকে মৃত ছাত্রের বাবা বলেছেন, ‘অকালে চলে যেতে হয়েছে ওকে। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা এখনও আছে। তবে এবার আমি ধৈর্য্য হারাচ্ছি। মনে হচ্ছে আমি হেরে যাচ্ছি। তবে বিশ্বাস হারাইনি। অভিযুক্তেরা নিশ্চিত শাস্তি পাবে।’ আর মৃত ছাত্রের মা চোখে✤র জল ফেলে বললেন, ‘আমার ছেলে কখনও কোনও অপরাধ করতে পারে না। বেঁচে থাকলে দেশের সম্পদ হতো। তাই হিংসা করে ওকে খুন করা হয়েছে। শেষবারের মতো আমাকে বলেছিল। আমরা সব জেনেও কিছু করতে পারিনি।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনায় সর্বস্তরের মানুষ কেঁপে উঠেছিল। বেরিয়ে এসেছিলꦦ নানা গোপন তথ্য। তবে আজ সবই স্মৃতি। মৃত ছেলেকে হারিয়ে আজ সেইসব স্মৃতি হাতরাচ্ছেন বাবা–মা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যা🦹লয় কাণ্ডে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে এসেছে যথেষ্ট উচ্চতা থেকে পড়ে যাওয়ার জেরেই মৃত্যু হয়েছে ছাত্রের। মৃত ছাত্রের মাথার বাঁ–দিকে চিড় ছিল। বাঁ–দিকের পাঁজরের হাড়ও ভেঙে গিয়েছিল। ভেঙে ছিল কোমরও। র্যাগিংয়ের মাধ্যমে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ছাত্র–প্রাক্তনীকে। তাঁদের পুলিশ হেফাজতে রেখে বিচার প্রক্রিয়া চলছে। কবে মিলবে শাস্তি? চোখের জলে অপেক্ষা বাবা–মায়ের।