মন্দারমণিতে বেআইনিভাবে গড়ে উঠেছে হোটেল–রিসর্ট। আর সেগুলি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন। তার জেরে হোটেল মালিকরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বুলডোজার নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। তারপরই থমকে যায় পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্রসৈকতের ধারে থাকা ১৪০টি নির্মাণের অস্তিত্ব। এগুলি ‘অবৈধ’ স্বীকৃতি পেয়েছে। এই আবহে এখন আরও প্রায় ১০০টি হোটেল–লজ মাথা তুলতে পারে মন্দারমণিতে বলে খবর। নির্জনতাকে যাঁরা পছন্দ করেন তাঁরাই আসতেন মন্দারমণিতে ছুটি কাটাতে। নিরি🌃বিলি সমুদ্রসৈকতে থাকা বালিয়াড়ি, লাল কাঁকড়া, বাদাবন, কেয়াঘাসের জঙ্গল পর্যটকদের আকর্ষণ করে। সাদা বালিতে পা ডুবিয়ে সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত দেখা তো আছেই।
এমন এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর পর্যটনস্থল এখন খবরের কেন্দ্রবিন্দুতে। কারণ সেই নির্জনতা এখন কোলাহলে পরিণত হয়েছে। একের পর এক হোটেল–রিসর্ট গজিয়ে উঠেছে। তাও আবার অবৈধভাবে বলে জেলা প্রশাসনের দা𒁏বি। আরও ১০০টি হোটেল গড়ে ওঠার পথে রয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ হোটেল গড়ে ওঠায় ধ্বংস হয়েছে প্রকৃতি। বেলাভূমি, বাদাবন এখন ধ্বংসের মুখে। লাল কাঁকড়ার বংশবৃদ্ধিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কেয়াঘাসের জঙ্গলর নির্জনতা এবং প্রাকৃতিক শোভা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পর নোটিশ জারি করে জেলা প্রশাসন। তাতেই অনিশ্চয়তার মেঘ দেখছে মন্দারমণির ১৪০টি ‘অবৈধ’ হোটেল। এই বিষয়ে স্থানীয় মৎস্যখটির সম্পাদক শ্রীকান্ত দাস বলেন, ‘মন্দারমণি লাগোয়া প্রায় ৬টি মৌজায় এমন নির্মী🌼য়মাণ হোটেল–লজের সংখ্যা ৫০০।’
আরও পড়ুন: প্যারোলে মুক্তি পেলেন অর্পিতা, মায়ের মৃত্যুর জেরে নির্দেশ দিল আদালত, পার্থ এখনও জেলে
বেশ কয়েকটি হোটেল মালিকদের দাবি, অনেক হোটেল–লজের কাজ আগেই শুরু হয়েছিল। কোথাও আবার সংস্কারের কাজ চলছে। কোনও হোটেলের হয়তো কাজ শেষের দিকে। কিন্তু নতুন হোটেলের সংখ্যা ১০০ হবে। মন্দারমণি দাদনপাত্রবাড় মৎস্যখটির সম্পাদক শ্রীকান্ত দাসের বক্তব্য, ‘প্রকৃতির উপর মারাত্মক কোপ পড়েছে। কোনও নিয়ম মা𒈔না হয়নি। কোস্টাল রেগুলেটেড জোন ম্যানেজমেন্ট অথরিটির রেগুলেশন মেনে যদি সমুদ্রসৈকত এলাকা ছেড়ে নিয়ম মেনে হোটেল তৈরি হতো তাহলে এমন বিপর্যয় দেখতে হতো না। কয়েক বছরে প্রায় ২৫০ মিটার এগিয়ে এসেছে সমুদ্রের জল।’
স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ীদের দাবি, মন্দারমণির বেশিরভাগ হোটেল গড়ে উঠেছে বাম আমলে। মাত্র ১০ বছর আগে এখানে হোটেল সংখ্যা ছিল হাতে গোনা ৭০ থেকে ৮০টি। সেটা এখন শতাধিক। এটা নিয়ে দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের সভাপতি দেবাশিস শ্যামল বলেছেন, ‘মন্দারমণির অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য হোটেল শিল্পের অগ্রগতি প্রয়োজন। কিন্তু সেটা পরিবেশ ধ্বংস করে নয়।’ সেখানে মন্দারমণি হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশানের সভাপতি মীর মমরেজ আলির কথায়, ‘🌌সিআরজেড অনুযায়ী এলাকা চিহ্নিতকরণ না করাই সমস্যা দেখা দিয়েছে। নতুন যে শতাধিক নির্মাণের কথা বলা হচ্ꦬছে, সেগুলি বাম আমলে তৈরি হয়েছে। মন্দারমণিতে এমন ১৮০ থেকে ২০০টি হোটেলের কথা আমি জানি। কিন্তু সব ক’টির কাজ এখনও শেষ হয়নি। এখন সেগুলির কথাই বলা হচ্ছে।’