ঘূর্ণিঝড় 'জাওয়াদ' রাজ্যে তাণ্ডব চালাতে না পারলেও তার প্রভাবে দুশ্চিন্তা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি রাজ্যের বহু আলুচাষি। জাওয়াদের ফলে টানা বৃষ্টিতে চলতি বছর আলুচাষে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়ে গিয়েছে আলুচাষের জমি। ক্ষতির আশঙ্কায় জাওয়াদের পরেই আত্মঘাতী হয়েছিলেন মেদিনীপুরের এক কৃষক। চাষে ক্ষতি হওয়ায় রাজ্যে আবারও কৃষক আত্মহত্যা করলেন। মৃত কৃষকের নাম মানিক শেখ (৪৩)। তিনি পূর্ব বর্ধমানের কালনার বিরুহা এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রের খবর, পরিবারের আর্থিক অবস্থা ঘোচানোর জন্য এবার ১৩ বিঘা জমিতে চাষ করেছিলেন ওই কৃষক। সেখানে কিছু নিজের জমি ছিল এবং কিছু জমিতে ভাগে চাষ করেছিলেন তিনি। ওই সমস্ত জমিতে ধান এবং আলু চাষ করেছিলেন। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়ে এবং স্ত্রী'র গয়না বন্ধক রেখে তিনি বীজ এবং সার কিনে জমিতে চাষ করেছিলেন। কিন্তু, জাওয়াদ যে অভিশাপ হয়ে আসবে তা জানা ছিল না তাঁর। টানা বৃষ্টিতে জলের তলায় চলে যায় সমস্ত আলু চাষের জমি। যার ফলে আলু গাছ নষ্ট হয়ে যায়।তারপর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই কৃষক। দুশ্চিন্তা ক্রমেই গ্রাস করে নিচ্ছিল তাঁকে। সেই দুশ্চিন্তা থেকেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন ওই কৃষক। শুক্রবার সকালে গোয়ালঘরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা ঋণ করে চাষ করার ফলে স্বাভাবিকভাবেই তিনি বুঝে উঠতে পারেননি যে কী করবেন। প্রসঙ্গত, এবার জাওয়াদের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি, বাঁকুড়া এবং পূর্ব বর্ধমানের আলুচাষিরা। কৃষকরা যাতে নতুন করে বীজ এবং সার কিনে চাষ করতে পারেন, তার জন্য কয়েকদিন আগেই শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছিলেন। আলুচাষিদের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার পাশাপাশি কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।