বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে দল থেকে বহিষ্কার হওয়া খুব চাপের ব্যাপার। কিন্তু এবার সেই রাস্তাতেই হাঁটল শাসকদল তৃণমূল। দক্ষিণ দিনাজপুরে একসঙ্গে তিন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করল ঘাসফুল শিবির। প্রাক্তন দুই কার্যকরী সভাপতি সোনা পাল, দেবাশিস মজুমদার এবং জেলা নেতা সুনির্মলজ্যোতি বিশ্বাসকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানালেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌতম দাস। সুতরাং দলের অন্দরে একটা ফাটল দেখা দিল বলে মনে করা হচ্ছে।এই বহিষ্কারের খবর প্রকাশ্যে আসতেই সোনা বলেন, ‘আমাদের ছাড়া জেলায় দল চলবে না। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে দল করি। তাই এই বহিষ্কার মানি না। বিষয়টা রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব।’ক্ষোভ উগরে দিয়ে দেবাশিস জানান, ‘আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন যাঁরা জেলায় দল চালাচ্ছেন, তাঁরা খাতায় কলমে তৃণমূলও নন। সে কথা আমি শো–কজের জবাবে লিখেছি। এঁদের নেতৃত্বে আমি দল করব না।’তবে একধাপ এগিয়ে কুশমণ্ডির নেতা সুনির্মলের হুঁশিয়ারি, ‘জেলা সভাপতি গৌতম দাসের নামে আমি মানহানির মামলা করব।’ উল্লেখ্য, অর্পিতা ঘোষ জেলা সভাপতি থাকার সময়ে সোনা ও দেবাশিসকে কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছিল। জেলা পরিষদের মেন্টরও ছিলেন হরিরামপুরের ডাকসাইটে নেতা সোনা। আইনজীবী নেতা দেবাশিস ছিলেন সিডব্লিউসি’র চেয়ারম্যান। তাঁদের একমাস আগেই দল বিরোধী কাজ ও দুর্নীতির অভিযোগে শো–কজ করা হয়। সেই শো–কজের জবাব অত্যন্ত কড়া ভাষায় হওয়ায় দল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁদের বলে খবর।তবে এখানে এক অদ্ভূত সমীকরণ হয়ে রয়েছে। সুনির্মলের স্ত্রী সুনন্দা বিশ্বাস কুশমণ্ডি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। আর সোনার মেয়ে অলিভিয়া পাল মহিলা তৃণমূলের নেত্রী। তাঁদেরও কি বহিষ্কার করা হবে? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জবাবে গৌতম দাস বলেন, ‘ওঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। তাই তাঁরা যেমন আছেন থাকবেন।’ সুতরাং তাঁরা বহিষ্কার হচ্ছেন না এটা নিশ্চিত। কিন্তু নিজের স্বামী এবং বাবার সঙ্গে যা ঘটেছে তার প্রতিশোধ তাঁরা নিতে পারেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।