💙 'বিদ্যাসাগরের উত্তরসূরী নারী শিক্ষার অগ্রদূত স্বাগতম'! ব্যানার, ফেস্টুনে লেখা এই বার্তা নিয়েই শুরু হয়েছে নয়া বিতর্ক। সৌজন্যে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের মেদিনীপুরের স্থানীয় নেতৃত্ব।
💖ঘটনা হল - গতকালই (সোমবার - ২১ এপ্রিল, ২০২৫) দু'দিনের সফরে মেদিনীপুর পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি আবার রাজ্যের শাসকদলের সর্বোময় নেত্রীও বটে। বিদ্যাসাগরের মাটিতে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ব্যানার, ফেস্টুন টাঙান তৃণমূলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তাতেই লেখা ছিল - 'বিদ্যাসাগরের উত্তরসূরী নারী শিক্ষার অগ্রদূত স্বাগতম'!
🅘বিষয়টি নজরে আসতেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। এমনকী, বিদ্য়াসাগরের পরিবারের সদস্যরা পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের পূর্বপুরুষ তথা বাংলার নবজাগরণের অন্যতম পুরোধার এহেন তুলনা নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ।
𝔍সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন - উত্তরসূরি বলতে তো সাধারণত রক্তের সম্পর্কে পরবর্তী প্রজন্ম ও অথবা কোনও ব্যক্তির ভাবাদর্শের অনুসারী ব্যক্তিকেই উত্তরসূরি বলা যেতে পারে।
ꦦকিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় তো বিদ্যাসাগরের পরিবারের কেউ নন। তাছাড়া, বিদ্যাসাগর নারীশিক্ষার প্রসার ঘটানোর পাশাপাশি সমগ্র সমাজকে সচেতন করেছিলেন। কিন্তু, সেই নবজাগরণের এত বছর পর বাংলায় এখনও নাবালিকাদের বিয়ে হয়। মেয়েদের একটা বড় অংশ শিক্ষার আলো থেকে দূরে থাকে। তারা কিশোরী বয়সেই সন্তানের জন্ম দেয়। বিদ্যাসাগর তো এমন সমাজ চাননি। তাহলে কীসের ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রীকে বিদ্যাসাগরের উত্তরসূরি বলা হচ্ছে, সেই প্রশ্নই তুলছেন বিদ্যাসাগরের পরিবারের সদস্যরা।
🎃প্রসঙ্গত, অবিভক্ত মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামের সন্তান ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। সেই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্য়ে তৃণমূল কংগ্রেসের এহেন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে।
🎃গ্রামের তরুণদের একাংশের বক্তব্য, একথা ঠিক যে কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্প গরিব ঘরের মেয়েদের স্কুলমুখী করেছে। কিন্তু, তারপরও নাবালিকাদের বিয়ে আটকানো যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে কীভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে বিদ্যাসাগরের উত্তরসূরি বলা যায়?
🅰যদিও অনেকে আবার এমন তুলনায় দোষের কিছু দেখছেন না। তাঁদের মতে, বাম জমানার তুলনায় তৃণমূলের আমলে অনেক বেশি উন্নতি হয়েছে। শুধুমাত্র মেয়েদের জন্যই অনেক সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে বিদ্যাসাগরের উত্তরসূরি বললে ক্ষতি নেই!
🌸যদিও শিক্ষামহলের একাংশের যুক্তি, বিদ্যাসাগর মহাশয় যা করেছিলেন, তা ছিল তাঁর একক লড়াই। ব্রিটিশ ভারতে, পিছিয়ে পড়া সমাজে, নারী শিক্ষা থেকে শুরু করে বিধবা বিবাহ - এসব প্রচলন করার জন্য তাঁকে কম যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়নি।
🌳কিন্তু, বাংলা তথা ভারতের বর্তমান আর্থসামাজিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যেকোনও নির্বাচিত সরকার নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করবে, এটাই স্বাভাবিক। তাই, এর সঙ্গে বিদ্যাসাগরের সংগ্রামের বিস্তর ফারাক রয়েছে। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য তাদের অবস্থানে অটল রয়েছে।