সরকারি খাস জমি লিজা নিয়ে কারখানা তৈরির নামে অন্য কাজে ব্যবহার হচ্ছে না তো? এবার এ’বিষয়েই তৎপর হলো রাজ্য সরকার। বহু ক্ষেত্রেই অনেক ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ শিল্প স্থাপনের জন্য সরকারি লিজে নিয়ে অন্যান্য কাজে তা ব্যবহার করে। এজন্য লিজ নেওয়া জমি ফিরিয়ে নেওয়ার কথাও ভাবছে রাজ্য। গত সপ্তাহে এই বিষয়♒েই আলোচনায় বসে রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যরা। নবান্ন সূত্রে খবর নয়া আইনের রূপরেখা তৈরি হবে অতি দ্রুত। বাংলায় বহুদিন ধরেই শিল্প এবং কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে পড়ে থাকা সরকারি খাস জমি দীর্ঘকালীন চুক্তিতে লিজ দেওয়া হয় আগ্রহী ব্যক্তি বা সংস্থাকে। আর এখানেই রয়েছে সর্ষের মধ্যে ভূত। শিল্প স্থাপনের নামে জমি লিজ নিলেও বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় সেই জমিতে নির্মাণ হচ্ছে বহুতল বাড়ি কিংবা অন্য কিছু। এর ফলে ধাক্কা খাচ্ছে সরকারের জনকল্যাণমূলক লক্ষ্যে জমি বন্টন-এর বিষয়টিও।
সূত্রের খবর এই ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দিয়েছেন, কড়া হাতে এই ধরনের অসাধু গ্রহীতাদের সনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। বৈঠকে শিল্প এবং নারী-শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পুরো ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ। বিপর্যয় মোকাবেলা মন্ত্রী জাভেদ খꦺানও উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে এই বৈঠকে যোগ দিতে পারেনি আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক।
ঠিক কী আলোচনা হল এই বৈঠকে? সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর শিল্প স্থাপনের জন্য দেওয়া জমিগুলির ক্ষেত্রে বဣর্তমানের লিজ আইনের খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা হয়। বর্তমান আইনের ত্রুটিগুলিও সনাক্ত করে তা সমাধানের চেষ্টা করা হয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। প্রসঙ্গক্রমে জমি ফেরত নেওয়ার পাশাপাশি লিজ চুক্তি ভঙ্গের শাস্তি জরিমানা করার বিষয়টি আলোচিত হয়।
সমস্ত বিষয়টি মসৃণ ভাবে এগোলে বাদল অধিবেশনের মধ্যেই এই জমি সংক্রান্ত বিল পেশ করা হবে বিধানসভায়। ব্রিটিশ আমলে সমুদ্র বা নদীর চরে জেগে ওঠা জমি চাষীদের হাতে তুলে দিতে তৈরি হয়েছিল ‘বেঙ্গল অ্যালুভিয়াল ল্যান্ড অ্যাক্ট ১৯২০’। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে ১৯৫৫ সালে ‘বেঙ্গল ল্যান্ড রিফর্ম অ্যাক্ট’ আসার পরে গুরুত্ব হারায় ১৯২০ সালের আইনটি। ১৯৫৫ সালে 𒈔প্রণীত ভূমি সংস্কার আইন তৈরির পরে ১৯২০ সালের এই আইনটি কেবলমাত্র খাতায়-কলমে ছিল বলেই চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছ♏েন। সে কারণেই অবলুপ্ত করা হচ্ছে এই আইনটি। এখন দেখার নতুন বিল পাস করার মাধ্যমে শিল্প স্থাপনের জন্য খাস জমি লিজ নেওয়ার বিষয়টি কোন পথে সমাধান হয়।