আত্মহত্যা করলেন এক ল্যাব অ্যাসিসট্যান্ট। সময়মতো বেতন মিলছিল না। বাড়ছিল ঋণের বোঝা। ঋণ শোধ করতে না পেরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। নিজের ঘরেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন মেঘনাদ সাহা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে কর্মরত ওই ল্যাব কর্মী। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে বেহালার পর্ণশ্রীর জয়রামপুরে। ওই ব্যক্তির দেহের পাশ থেকে সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়েছে। ওই কর্মীর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বিদ্যাসাগর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম দেবব্রত পাল (৪৬)। তিনি পর্ণশ্রীর জয়রামপুরের বাসিন্দা। মেঘনাদ সাহা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে ল্যাব অ্যাসিসট্যান্ট পদে কর্মরত ছিলেন দেবব্রতবাবু। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, যেহেতু করোনার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল, সে কারণে নিয়মিত অনলাইনে পড়ুয়াদের ক্লাস নিতে হত দেবব্রতবাবুকে। এই কাজের জন্য ভোরে ঘুম থেকে উঠতে হত তাঁকে। তারপর স্টাডি রুমে ক্লাস করাতে বসে পড়তেন তিনি। এদিনও সকালে উঠে তিনি ওই ঘরে ঢুকে পড়েন। মৃতের মা প্রতিমা পাল জানিয়েছেন, বেলার দিকে ছেলের ঘরে চা দিতে আসি। বাইরে থেকে ডাকাডাকি করলেও তার কোনও সাড়া শব্দ পাইনি।তখনই সন্দহ হয় তাঁর। তিনি গিয়ে বিষয়টি পুত্রবধূ ও প্রতিবেশীদের জানান। সবাই ছুটে এসে ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে দেখেন, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে দেবব্রতবাবুর নিথর দেহ। ঘটনার পরই পর্ণশ্রী থানায় খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবব্রতবাবুর পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘এই মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’ দেবব্রতবাবু এই সুইসাইড নোটে আরও জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে ঠিক মতো বেতন পাচ্ছিলেন না। সেজন্য একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে ধারও নিয়েছিলেন তিনি। সেই ধার শোধ করতে না পেরে অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। সেকারণেই এই চরম সিদ্ধান্ত নেন দেবব্রত বলে মনে করছে তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।