পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা🍸 নির্বাচন হতে ৬ মাসেরও কম সময় বাকি। ইতিমধ্যে বেজে গিয়েছে ভোটের দামামা। সোমবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের দফতরে হয়ে গেল সর্বদলীয় বৈঠক। আর তার মধ্যেই রাজ্যের অন্যতম বিরোধী দলের মুখে শোনা গিয়েছে ভোটে জিতে পুরনো সেই প্রতিশ্রুতি পূরণের কথা। ক্ষমতায় এলে রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি।
রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের এক জনসভায় রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, রাজ্যে ক্ষমতায় এলে তৃণ🔜মূল–সহ সমস্ত দলের যে সব নেতাকর্মী জেলে বন্দি রয়েছে তাঁদের সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাঁদের বিরুদ্ধে সমস্ত মাম🐈লাও প্রত্যাহার করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক বন্দিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সমস্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করব। কেবল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা নয়, মিথ্যা মামলায় জড়িত সিপিএম এবং কংগ্রেস কর্মীদের মামলাও প্রত্যাহার করব আমরা।’
ক্ষমতায় এলে জেলে বন্দি বা মিথ্যা মামলায় জড়িত তৃণমূল কর্মীদেরও পাশে একইভাবে থাকবে বিজেপি? দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘যাতে দলꩲ ছাড়তে না পারে তার জন্য বহু তৃণমূল কর্মীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে শাসকদল। এমন তৃণমূল কর্মীদের পাশে আমরা অবশ্যই থাকব। তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সমস্ত মামলা তুলে নেবে বিজেপি। বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
২০১৯–এর লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে ১৯টি আসন দখল করে রীতিমতো চমকে দেয় গেরুয়া শিবির। এখন ২০২১–এর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে রণকৌশল ঠিক করছে বিজেপি। সোমবারই বিজেপি–র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার ডাকে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠকে যোগ দিতে দিল্ল♛ি গিয়েছেন দিলীপ ঘোষ।
ভোটে জিতলে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি এই প্রথম নয়। রাজ্যের এক মান𓆏বাধিকার কর্মী জানান, ১৯৭৭ সালে যখন পশ্চিমবঙ্গে প্রথমবার বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসে, তখন নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে রাজন🐓ৈতিক বন্দিদের মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু।
আর রাজ্যে পಞালাবদল ঘটিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্ত করার একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বছর মে মাসে তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্ত করতে ১৩ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়। ৪ জুন কলকাতা গেজেটে ওই কমিটিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু তৃণমূল সেই কথা রাখেনি বলেই জানালেন অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অফ ডেমোক্র্যাটিক রাইটসের কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের সদস্য রণজিৎ সুর। তিনি বলেন, ‘তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার রাজনৈতিক বন্দিদের মামলা ಞপ্রত্যাহার করে নিলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকার তা করেনি। ২০১১ সালে দুশোরও বেশি রাজনৈতিক বন্দি ছিল পশ্চিমবঙ্গে। তার মধ্যে যাঁরা জামিন পেয়েছেন বা আদালত যাঁদের ম𒁏ুক্ত করেছে শুধুমাত্র তাঁরাই জেল থেকে বেরোতে পেরেছেন।’
তিনি আরও জানান, পরে ২০১৩ সালে রাজনৈতিক বন্দিদের সংজ্ঞাই পরিবর্তন করে দেয় তৃণমূল সরকার। যার জেরে এই মুহূর্তে সরকারের পক্ষে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্ত করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। ২০১১ সালে এ ব্যাপারে তৃণমূল সরকারের গঠিত কমিটি ৫২ জন বন্দির একটি তালিকা দিয়েছিল যাঁদের মুক্ত করা যায়। কিন্তু পরে মাওবাদি বন্দিদের মুক্ত করার ব্যাপারে রাজ্যকে সাবধান করে কেন্দ🦩্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
এদিকে, বর্তমান তৃণমূল সরকরের তরফে সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘আসলে দিলীপ ঘোষ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির কথা বলে রাজ্যের সমাজবিরোধী তথা দুষ্কৃতীদের বার্তা দিতে চাইছেন যাতে তারা বিজেপি–র হয়ে ভোটে অস💮ামাজিক কাজ করে। এটি অসাংবিধানিক এবং অবৈধ। বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসার দিবাস্বপ্ন দেখছে। এতে অবশ্য কোনও ক্ষতি নেই!’
অন্যদ🅺িকে, লোকসভায় বিরোধী দলনেতা তথা পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বামফ্রন্টের দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, এগুলি কিছু অতিরিক্ত ভোট পাওয়ার প্রত্যাশায় বিজেপি–র নির্বাচনী গিমিক ছাড়া আর কিছুই নয়।