মুখ্যমন্ত্রী আগেই আবেদন জানিয়েছেন, নদীতে নয়, ছট পালন করুন নিজের এলাকায় এবং পাড়ায়। রাজ্য সরকার নিউ নর্ম্যালে ছট উদযাপনের জন্য শহরের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু কৃত্রিম অস্থায়ী জলাশয় তৈরি করেছে। সেই সংখ্যাটাও দেড় হাজার। যাতে ভিড় না হয় এবং দূরত্ব বজায় রেখে পুজো দেওয়া যায় সেই ব্যবস্থা করা হয়। আদালতের নির্দেশে রবীন্দ্র এবং সুভাষ সরোবরে নিষিদ্ধ ছটপুজো। তবে নিষেধাজ্ঞাকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলে গা–জোয়ারি। রবীন্দ্র সরোবরের সামনে শুক্রবার সকালে ভিড় জমান একদল পুণ্যার্থী। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা বোঝাতে গেলে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা।বংশানুক্রমে এখানেই ছটপুজো করে আসছেন বাসিন্দারা। এবার করতে না পারাই সকলেরই মন খারাপ। মুশকিল আশান করেছে রাজ্যে সরকারি জলাশয়। মন খারাপ হলেও এবার এখানেই ছটপুজো করলেন এখানকার বাসিন্দারা। পুলিশ এখানে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ব্যারিকেড করে রাখে। রবীন্দ্র সরোবর এবং সুভাষ সরোবরের সব গেটের সামনে ব্যারিকেড করে রাখা হয়েছে। যেখানে ব্যারিকেড নেই সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।পুলিশ সূত্রে খবর, কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করেছে কলকাতা পুরসভা। সেখানে দু’জন করে পুণ্যার্থীকে ছাড়া হচ্ছে ছটপুজো করার জন্য। আদালতের নির্দেশিকার জেরে ভোর থেকেই বিভিন্ন সরোবর ও নদীর ঘাটে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সুভাষ ও রবীন্দ্র সরোবরে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ বাহিনী। গঙ্গার সবকটি ঘাটে ওয়াচ টাওয়ার থেকে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।ছটপুজোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে কেএমডিএ। যে বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা ১৬ তারিখ, সেখানে শুনানি না হয়ে অন্য বেঞ্চে শুনানিতে সরোবরে ছটপুজোর কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছিল ২৩ তারিখ। কিন্তু ২০ তারিখ ছটপুজো। তাই ২৩ তারিখ শুনানি হলে, কোনও লাভ হবে না। এই যুক্তিতে কেএমডিএ জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন করে। সেইমতো বৃহস্পতিবার তিন বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি হয়। কিন্তু একই রায় বহাল রাখে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।রাজ্য সরকারের এক আধিকারিক বলেন, ‘ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার ১৫০০ কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করেছে ছট পুণ্যার্থীদের জন্য। করোনা সতর্কতায় এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া রাস্তায় রাস্তায় শোভাযাত্রা বের করার উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা আছে।’ এদিকে ঘাট সংলগ্ন এলাকায় উড়ছে ড্রোন। নদীবক্ষে ক্রমাগত পেট্রোলিং করছে রিভার ট্রাফিক পুলিশ। জলে সুর্যের প্রতিবিম্ব। যার পোশাকি নাম ছট্টি মাইয়া। ছট পুজোর অনিবার্য অঙ্গ হিসেবে যা প্রচলিত যুগের পর যুগ। সেখানে এবারের ছটপুজোয় এল পরিবর্তন।অন্যদিকে টুইটে সকলকে ছটপুজোর শুভেচ্ছা জানান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। আমাদের সমস্ত কাজে পবিত্রতার প্রকাশ পাক বলেই টুইট করেছেন তিনি। ইংরাজি এবং হিন্দি ভাষায় সকলকে ছটপুজোর শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, ‘আমরা কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করেছি। নদীবক্ষে গিয়ে পুজো করতে চাইলে কোভিড বিধি মেনে তা করুন। ছোট ছোট গ্রুপে যান। আর আদালতের নির্দেশ মানুন এবং রাস্তায় শোভাযাত্রা করবেন না।’