পাস্ট ইজ পাস্ট। অতীতের কথা মনে করতে চান না কেউ। তাই তো আবার তাঁরা এক মঞ্চে এলেন। যুജযুধান প্রতিপক্ষ হয়েও একমঞ্চে এলেন। বলা যেতে পারে নিয়ে আসা হল। তবে তাতে কোনও আপত্তি উঠল না। দু’পক্ষই বাধ্য ছেলের মতো রাজি হলেন। অথচ তাঁদের মধ্য🦩ে এমন সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল যা প্রকাশ্যে এসেছিল বিধানসভার করিডরে। তারপর একজনের মন্ত্রীত্ব খোয়া গিয়েছিল। আর তা অপরজনের কাছে পৌঁছেছিল। ওই ঘটনাই রাজ্য–রাজনীতিতে সাড়া ফেলেছিল। আজ, মঙ্গলবার তাঁদের দেখা গেল বিশ্ববাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক ফ্রেমে দুই গায়ক তথা যুযুধান মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন ও বাবুল সুপ্রিয়। গলা মিলিয়ে তাঁরা গাইলেন রাজ্য সঙ্গীত, ‘বাংলার মাটি বাংলার জল...’।
এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট যা অতীত তা ভুলে যাওয়াই ভাল। ইন্দ্রনীলের হাতে থাকা পর্যটন দফতর বাবুলকে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর জুলাই মাসে একটি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেন মমতা 🌼বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে রাজ্যের পর্যটন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান পদ থেকে আমলা নন্দিনী চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। নিয়ে আসা হয় মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে। ওই সিদ্ধান্তের পর দেখা গেল মন্ত্রিসভার রদবদলে পর্যটন দফতর আবার ফিরে গেল ইন্দ্রনীল সেনের কাছে। সেদিন রাজ্য–রাজনীতিতে এটাই চর্চিত হয়েছিল। আবার চর্চা শুরু হল বাবুল–ইন্দ্রনীল একমঞ্চে চলে আসায়। তার উপর মধ্যমণি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, মুখ্যমন্ত্রী নিজের মন্ত্রিসভার দুই যুযুধান মন্ত্রীকে একমঞ্চে নিয়ে এসে মিলিয়ে দিলেন। মুছে দিলেন তিক্ততা। আর এই মঞ্চের নাম—বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। একদা ইন্দ্রনীলের উদ্দেশে বাবুলকে বিধানসভায় বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘তুমি আমার দফতরের কাজ আটকাচ্ছ কেন? তুমি সরকারি কাজ আটকে রাখতে পারো না। তুমি ফাইল পাঠানো বন্ধ করে দিলে কাজ হবে কী করে!’ প্রত্যুত্তরে ইন্দ্রনীল বাবুলকে বলেন, ‘তোর যা বলার তুই সেটা দিদিকে গিয়ে বল’ পাল্টা বাবুল আক্রমণ শানিয়ে বলেন, ‘সে তো আমি বলেইছি। যদি দরকার মনে করি আবার বলব। কিন্তু এভাবে আমার দফতরের কাজ আটকাতেꩵ তুমি পারো না।’ তখন ইন্দ্রনীল বলেছিলেন, ‘এখানে এভাবে কথা বলিস না তুই। তোর দফতরের কাজ আমি কেন আটকাতে যাব। তোর কিছু বলার থাকলে দিদিকে গিয়ে বল।’
আরও পড়ুন: ‘ঘুষ নেবেন না, ঘু🧜ষ দেবেন না’, বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে মানুষকে বড় বার্তা দিলেন রাজ্যপাল
এই কথোপকথন যখন দুই মন্ত্রীর মধ্যে হয় তখন সম্পর্ক কতটা মধুর তা বুঝতে অসুবিধা থাকে না। সেখানে দু’জনকে একমঞ্চে নিয়ে এসে গান গাওয়ানো নিঃসন্দඣেহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃতিত্ব। তার পরে সময় কেটে গেলেও দু’জনের সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে এমন শোনা যায়নি। মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরের বিজয়া সম্মিলনীতে ইন্দ্রনীলের সঙ্গে বেশ কয়েকজন গায়ক–গায়িকা ছিলেন। সেখানেও রাজ্য সঙ্গীত গাওয়া হলেও দেখা যায়নি বাবুল সুপ্রিয়কে। কিন্তু মঙ্গলবার বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে এমন ছবি লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।