রাজ্যের শাসক–বিরোধীর সংঘাত শুরু হয় পিএসি চেয়ারম্যানের পদকে কেন্দ্র করে। এবার নতুন বিধানসভার প্রথম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন বসতে চলেছে। ঠিক তার আগে শাসক–বিরোধী পক্ষের সংঘাতের বাতাবরণ আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। কারণ অধিবেশনের আগে প্রথামাফিক সর্বদল ও কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক ডেকেছেন স্পিকার। নতুন এই কমিটিতে বিজেপির ৬ জন বিধায়ককে মনোনীতও করা হয়েছে। কিন্তু পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান পদের ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত সরকার পক্ষের ডাকা বৈঠকে যোগ দিতে নারাজ বিজেপি। যদিও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আবারও জানিয়েছেন, পিএসি–সহ বিভিন্ন কমিটির চেয়ারম্যানদের নাম অধিবেশনের শেষে বিধানসভা কক্ষেই ঘোষণা করবেন তিনি।বিধানসভা সূত্রে খবর, পিএসি, পাবলিক আন্ডারটেকিংস, এস্টিমেটস এবং লোকাল ফান্ড অ্যাকাউন্টস—চার কমিটির সদস্যপদে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল শুক্রবার। সেই সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু চারটি কমিটিরই ২০ জন করে সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এই তথ্য বিধানসভার সচিবালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। এবার কমিটিগুলির চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করার কথা স্পিকারের।সরকারি নথি অনুযায়ী, মুকুল রায় এখনও বিজেপির বিধায়ক। কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে জিতেছেন তিনি। এই যুক্তিতে তাঁর পিএসি’র চেয়ারম্যান পদ পেতে বাধা নেই বলে সওয়াল করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকেই রাজ্য–রাজনীতি বেশ তপ্ত হয়ে ওঠে। বিজেপি অভিযোগ করছে, দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুলবাবুর বিধায়ক পদ খারিজের আবেদনের উপরে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। তাঁকে পিএসি কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হলে তা হবে ‘অগণতান্ত্রিক’ এবং ‘অসাংবিধানিক’।তবে পাঁচ বছর আগেও বিরোধী দল কংগ্রেসের সুপারিশ উড়িয়ে দিয়ে মানস ভুঁইয়াকে পিএসি’র চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়েছিল। আবার সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিচারে বিধানসভার অধিকাংশ কমিটি তৃণমূল কংগ্রেসই পাবে। তৃণমূল কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, এই বিষয়ে স্পিকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।নতুন কার্য উপদেষ্টা কমিটিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গার পাশাপাশি বিজেপির মিহির গোস্বামী, সুদীপ মুখোপাধ্যায়, অম্বিকা রায় ও বিমান ঘোষকে সদস্য করা হয়েছে। বিজেপি পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, পিএসি’র প্রশ্নে ফয়সালা হলে তবেই তারা বাকি কমিটির কথা ভাববে! আগামী ২ জুলাই অধিবেশন শুরুর আগে সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়েছে সোমবার। এখন দেখার জল কতদূর গড়ায়।