এটিএম জালিয়াতিতে ব্ল্যাক বক্স নামে একটি বিশেষ যন্ত্রের হদিশ পেল তদন্তকারীরা।এই বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে এটিএম মেশিনটিকে রিপেয়ারিং মোডে নিতে পারেন জালিয়াতরা।রিপেয়ারিং মোডে চলে গেলেই এটিএমের ক্যাশ ট্রে থেকে টাকা বের করা জলভাত হয়ে যেত তাদের কাছে।সম্প্রতি এটিএম জালিয়াতিকাণ্ডে ধৃতদের জেরা করে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যে এটিএম জালিয়াতিকাণ্ডে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।সুরাত থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে মনোজ গুপ্ত ও নবীন গুপ্তকে।এরা দুজনেই দিল্লির বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।কলকাতা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বিশ্বজিৎ রাউত ও আবদুল সইফুল মণ্ডলকে।তাদেরকে জেরা করেই তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে, কীভাবে এই ব্যাঙ্ক জালিয়াতির কাজ চলত।তাদের কথায়, চাবি দিয়ে এটিএমের হুট খুলে ভিতরের ইউএসজি পোর্টে ব্ল্যাক বক্সটিকে বসিয়ে দেওয়া হয়।ব্ল্যাক বক্সটি বসে যাওয়ার পর পুরো এটিএম মেশিনটির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে পেয়ে যান জালিয়াতরা।ব্ল্যাক বক্সটি বসানোর সঙ্গে সঙ্গে মেশিনটি রিপেয়ারিং মোডে চলে যায়।জানা যাচ্ছে, এই ব্ল্যাক বক্স মোবাইলের মাধ্যমেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।এই ব্যবস্থার মাধ্যমে টাকা বেরোনোর কন্ট্রোলটিও জালিয়াতদের হাতে চলে আসবে।তদন্তকারীরা জালিয়াতদের জেরা করে জানতে পেরেছে, ইতিমধ্যে ওই যন্ত্রটি ব্যবহার করে গত কয়েকদিনে ২ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, কলকাতার ২ যুবক দিল্লির ওই ২ বাসিন্দাকে সাহায্য করত।তাঁদের হোটেল খুঁজে দিত।সেই সঙ্গে কোথায় কোথায় নিরাপত্তারক্ষীবিহীন এটিএম আছে, সেই তথ্যও তুলে দিত।এই কাজে কমিশনের বিনিময়ে নিজেদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়াও দিয়েছিল তারা।পুলিশ সূত্রে খবর, নিউ মার্কেটের একটি এটিএম থেকে ১৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে।যাদবপুর থানার একটি এটিএম থেকে ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে ও কাশীপুর থানার একটি এটিএম থেকে ৭ লাখ টাকা তোলা হয়েছে। উল্লেখ্য, তদন্তে নেমে আধিকারিকরা প্রথমে জানতে পারেন, এই সব এটিএম থেকে টাকা তোলা হলেও কোনও গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা যাচ্ছে না।তখনই পুলিশের সন্দেহ হয়, তাহলে এমন কিছু বিশেষ পদ্ধতি ও নতুন এক ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে টাকা গায়েব হচ্ছে।এরপরই সিসিটিভি ফুটেজ হাতিয়ার করে কসবার বাসিন্দা বিশ্বজিতের খোঁজ পায় পুলিশ।তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা অঙ্কের টাকাও মেলে।এরপরেই গোটা কাণ্ডের জট খুলতে থাকে।