পুজোর মুখে বিপদ আরও বাড়ল রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এবার প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করল সিবিআই। একইসঙ্গে, গ্রেফতার করা হয়েছে অয়ন শীলকেও।বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত খবর অনুসারে, সংশ্লিষ্ট মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অয়ন শীলকে গ্রেফতার করার আর্জি জানিয়ে বিশেষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল সিবিআই। কথা ছিল, মঙ্গলবারই এই ইস্যুতে পার্থকে আদালতে পেশ করা হবে।অন্যদিকে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আগেই ইডি-র হাতে ধৃত, জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায় সোমবার বিকেল থেকেই অসুস্থ বোধ করেন বলে জানা গিয়েছে। যার জেরে তাঁকে সংশোধনাগারেরই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সূত্রের খবর, মঙ্গলবারও জেল হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে, মঙ্গলবার বিশেষ আদালত সিবিআইয়ের আর্জি মঞ্জুর করে। এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অয়ন শীলকে গ্রেফতার করে সিবিআই।সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য বলছে, ২০১৪ সালে যে চাকরিপ্রার্থীরা টেট পাস করতে পারেননি, তাঁদের একাংশ বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিলেন। এই অনিয়মের নেপথ্যে ১ কোটি টাকারও বেশি অঙ্কের দুর্নীতি হয়েছিল, যার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন পার্থ ও অয়ন।সূত্রের দাবি, সংগঠিত অপরাধের মতো, এক্ষেত্রে প্রথমেই যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি কিনতে ইচ্ছুক, সেই সব টেট অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করা হয়। অয়ন শীল, কুন্তল ঘোষ প্রমুখদের হাত ঘুরে সেই তালিকায় পৌঁছে যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে।পরবর্তীতে মোটা টাকার বিনিময়ে ওই চাকরিপ্রার্থীরা বেআইনিভাবে নিয়োগ পান বলে অভিযোগ। টাকার অঙ্কের লেনদেন নিয়ে তদন্ত চলাকালীনই বিষয়টি সামনে আসে বলে দাবি করা হচ্ছে।এ নিয়ে নির্দিষ্টভাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অয়ন শীলকে জেরা করতে চায় সিবিআই। সেই কারণেই তাদের গ্রেফতার করতে চেয়ে বিশেষ সিবিআই আদালতের দ্বারস্থ হয় তারা। আদালত সবদিক খতিয়ে দেখে সেই আবেদন মঞ্জুর করে। সূত্রের দাবি, আপাতত জেলেই থাকবেন পার্থ ও অয়ন।এদিকে, গোরুপাচার মামলায় সদ্য জামিন পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। আগেই জামিন পেয়েছেন নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্য। এই আবহে আইনজ্ঞ মহলের একাংশ মনে করছিল, এবার হয়তো পার্থও জামিন পাবেন।এমনকী, আদালতে তাঁর আইনজীবী সেই প্রচেষ্টাও শুরু করেছিলেন। নাম না করে তুলেছিলেন অনুব্রত মণ্ডলের জামিন পাওয়ার প্রসঙ্গ। তবে, আপাতত যে সেই সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ, তা সিবিআইয়ের সাম্প্রতিকতম এই পদক্ষেপ এবং বিশেষ আদালতের নির্দেশেই স্পষ্ট হয়ে গেল।প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথম ২০২২ সালের ২৩ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত তিনি জামিনে মুক্ত হতে পারেননি।