ওরা প্রত্যন্ত গ্রামে পোস্টার মারতে জানে। বন্দুক হাতে নিয়ে সমাজ বদল করতে চায়। কঠিন দিনযাপন করে বেঁচে থাকার লড়াই করে। জীবনকে বাজ꧋ি রেখে পড়ে থাকে জঙ্গলের গভীরে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তাদের মূলস্রোতে নিয়ে আসার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাই জঙ্গলমহলের মাওবাদীদের মধ্যে ২২০ জনকে স্পেশ্যাল হোমগার্ডের চাকরি দিল রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই মোট তিন ধাপে প্রায় ১৩০০ জনকে চাকরি দিয়ে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এবার চতুর্থ ধাপে নেতাজি ইন্ডোর থেকে ভার্চুয়ালি ওই চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক কার্যালয়ে একটি অনুষ্ঠান দেখানো হয়। সেখানে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের উপস্থিতিতে প্রাক্তন মাওবাদীদের হাতে ওই নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী আগে বহুবার বলেছেন, জঙ্গলমহল এখন হাসছে। বিরোধীরা তাঁর মন্তব্যের কটাক্ষ করেছেন। কিন্তু🍬 মাওবাদীদেক চাকরি দিয়ে মূলস্রোতে নিয়ে আসায় সেখানের সমস্যা অনেকটা মিটে গিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় প্রচুর চাকরি দেওয়া হয়েছে। এমনকী মাওবাদীদের মধ্যে থাকা মহিলারাও চাকরি পেয়েছেন। সুতরাং সিপিআই (মাওবাদী) শহিদ সপ্তাহের (২৮ জুলাই–৩ অগস্ট) মধ্যেই রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপে জঙ্গলমহলে কোণঠাসা হয়ে গেল মাওবাদীরা বলে মনে করা হচ্ছে।
একুশের নির্বাচনের আগে মাওবাদী উপদ্রুত তিন জেলা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামে সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে মাওবাদীরা চাকরির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। জেলাশাসকের কাছে পর্যন্ত তাদের দাবি পৌঁছে যায়। চাকরির দাবিতে পোস্টার পড়েছিল। এই চাকরির দাবিত🐬ে মাওবাদী নামাঙ্কিত সবচেয়ে বেশি পোস্টার পড়ে পুরুলিয়ায়। তবে অনেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা রেখেছিলেন। যা কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রীও।
স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে খবর, মেদিনীপুরে যে ১১০ জন এই চাকরি পেলেন তার মধ্যে পুরুষ রয়েছে ১০৪ জন। মহিলা ৬ জন। ঝাড়গ্রামে ৮০ জনের মধ্যে পুরুষ ৬৮ জন, মহিলা ১২ জন। পুরুলিয়ায় ১৯ জনের মধ্যে পুরুষ ১৫ জন, মহিলা ৪ জন। বাঁকুড়ায় ১১ জনের মধ্যে ১০ জন পুরুষ, একজন মহিলা। এই স্পেশ্যাল হোমগার্ডরা বেতন পান ১৭ হাজার টাকা। প্রতি মাসে এই বেতন ছাড়া ঘর ভাড়া ও চিকিৎসা খরচ বাবদ আরও সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। তবে কেন্দ্র বা অন্যান্য রাজ্য— যাদের মাথার দাম ধার্য রয়েছে তাদেরকে পৃথকভাবে দু’লাখ টাকার স্থায়ী আমানত করে দেওয়া হয়েছে তඣিন বছরের জন্য।