প্রয়াত হয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা মানব মুখোপাধ্যায়। ৬৭ বছর বয়সেই চিরবিদায় বামফ্রন্টের তথাকথিত তাত্ত্বিক নেতা। বাম আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অনেকেরই এদিন মনে পড়়ে যাচ্ছে সেই ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে আসা মানব মুখোপাধ্যায়ের কথা। যুব আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন তিনি। বামফ্রন্টের এক জেলা নেতার কথায়, বরাবরই শিক্ষিত, শহুরে নেতা হিসাবেই পরিচিত ছি🐎লেন মানববাবু। আর তাঁর এই তাত্ত্বিকতাকে যথেষ্ট মর্যাদা দিতেন পার্টির জেলা নেতৃত্ব।
বামফ্রন্ট তখন ক্ষমতার তুঙ্গে। লালে লাল গোটা বাংলা। বিজনেস ম্যানেজমেন্টের ছাত্রটি হয়তো কর্পোরেট জগতে গিয়ে বেশ নাম করতে পারতেন। না, কর্পোরেট গলিতে গেলেন না তিনি। মন দিয়ে শুনতেন গণসঙ্গীত। আর সেই সঙ্গে মার্কসবাদের বইতে ডুব দিলেন তরুণ🎃 মানব। এরপর ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়লেন প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে। ১৯৯১ সাল। বেলেঘাটা বিধানসভা থেকে নির্বাচনে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন পার্টির অন্দরে। ৯৬ সালে পর্যটন দফতর ও যুব কল্যাণ দফতরের ভারপ্রাপ্তমন্ত্রীও ছিলেন তিনি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের মন্ত্রী ছিলেন তিনি।
আপাত গম্ভীর একজন মানুষ। শহরের শিক্ষিত নেতা। জেলায় দলের ভালোমন্দের দায়িত্ব নিয়ে তিনি বার বার ছুটে যেতেন। মানব মুখোপাধ্যায়কে ঘিরে তেমনই কিছু টুকরো স্মৃতি আজ মনে আসছে জেলার নেতাদের। উত্তরবঙ্গের জেলাস্তরের এক নেতা বলেন, আমাদের দুর্বলতাগুলি খুব ভালো করে ধরিয়ে দিতেন তিনি। রাজ্য থেকে তিনি যখন জেলায় আসতেন তখন পার্টি অফিসেই থেকে যেতেন। তবে একেবারে প্রত্য✱ন্ত গ্রামে গিয়ে রাজনীতি করেছেন, গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষের সঙ্গে থেকে সংগঠনকে গড়ে তুলেছেন এমনটা ঠিক নয়। তবে কীভাবে সংগঠনকে গড়ে তুলতে হবে সেব্যাপারে অত্যন্ত সুপরামর্শ দিতেন তিনি।
বুধবার তাঁর দেহ দান করা হবে বলে দল সূত্রে খবর।
বাম আমলের প্রাক্তন মন্ত্রী খগেন্দ্রনাথ সিনহার মনে পড়ে যাচ্ছে সেই ফেলে আসা দিনগুলোর কথা। তখন মানব মুখোপাধ্যায় উত্তর দিনাজপুরের দায়িত্বে ছিলেন। বার বার ছুটে যেতেন রায়গঞ্জে। বাম জমানার একেবারে শেষাশেষি। দলকে আরও মজবুত করার ডাক উঠছে জেলায় জেলায়। প্রাক্তন মন্ত্রী খগেন্দ্রনাথꩲ সিনহা হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানিয়েছেন, জেলাতে এলে দেখতাম মানব মুখোপাধ্যায় অনেক রাত পর্যন্ত লেখালেখি করতেন। দুটি মিটিংয়ের ফাঁকেও কী যেন লিখতেন পার্টি অফিসে বসে। আসলে লেখালেখি করতে খুব ভালোবাসতেন। তাত্ত্বিক নেতা ছিলেন। একদিন জিজ্ঞাসাও করে ফেলেছিলাম, কী লেখেন আপনি? হেসেছিলেন তিনি। প্রাণখোলা হাসি। খুব কষ্ট হচ্ছে আজ…