বামফ্রন্ট সরকারের ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার আগে বঙ্গ–সিপিএমের লাইন হয়ে উঠে ছিল ‘শুদ্ধিকরণ’। কিন্তু সেই শুদ্ধিকরণে কতজন শুদ্ধ হয়েছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পরও ‘শুদ্ধিকরণ’ নীতি চালু ছিল। তারপর তা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়। কিন্তু পার্টির নেতাদের দুর্ব্যবহার, ভুল কাজ, মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া, মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে গালিগালাজ থেকে শুরু করে বিতর্কিত কথাবার্তা সিপিএমের আখেরে ক্ষতি করেছে। আর তাই বামের ভোট রামে স্থানান্তরিত হয়েছে। সিপিএম সব দিক থেকেই শূন্যে নেমে গিয়েছে। আর তাই এবার পার্টিতে ‘ত্রুটি সংশোধন’ অভিযান জোরালোভাবে করতে চাইছে আলিমুদ্দিন বলে সূত্রের খবর।
এদিকে দলের নানা নেতার বিরুদ্ধে নারীঘটিত কুকর্মের অভিযোগ উঠছে। তার জেরে কাউকে পদ থেকে সরাতে হচ্ছে, কাউকে বহিষ্কার করতে হচ্ছে, এমনকী সাসপেন্ড পর্যন্ত করে তদন্ত চালাতে হচ্ছে। এই কাজগুলির জেরেই মুখ পুড়ছে আলিমুদ্দিনের। তাই এবার সিপিএমের পার্টি সদস্যদের কমিউনিস্ট মূল্যবোধ থেকে শুরু করে নীতিবোধ রক্ষায় আবার নতুন করে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। ২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন আছে। আর সেখানে যাতে নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে তাই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘পাক অধিকৃত কাশ্মীর আজ না হয় কাল আমাদের দখলে আসবেই’, বড় দাবি করলেন দিলীপ
অন্যদিকে বারবার এমন অভিযোগ উঠে আসতেই পদক্ষেপ করতে নেমে পড়েছে বঙ্গ সিপিএম। সিপিএম, পার্টির চিঠিতে লিখেছে, সর্বদা দলের অন্দরে ‘ত্রুটি সংশোধন’ অভিযান ঘটেই থাকে। এই প্রক্রিয়া যত্ন সহকারে পরিচালিত হচ্ছে কিনা সেটা দেখা দরকার। তার সঙ্গে ত্রুটি–বিচ্যুতি থাকছে কিনা, সেটাও পর্যালোচনা করা দরকার। এই বুর্জোয়া সমাজব্যবস্থায় মূল্যবোধের অবক্ষয়, নীতিহীনতা, দুর্নীতি, চারিত্রিক অধঃপতন প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে। এসবের প্রভাব পার্টিতে পড়ছে না সেই দাবি করা যায় না। তাই কমিউনিস্ট মূল্যবোধ, নীতিবোধ রক্ষা করা প্রত্যেকটি সদস্যের অবশ্য কর্তব্য। এই ফরমান জারি করা হয়েছে।
এখন দেখার এই ফরমান জারির পর কতটা কাজ হয়। ইতিমধ্যেই নারীঘটিত কুকর্মের অভিযোগ উঠেছিল বলেই জেলা সম্পাদক পদ থেকে সরতে হয় প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষকে। আবার পার্টির উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রবীণ নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য এখন সাসপেন্ড। এক মহিলা সাংবাদিককে যৌন হেনস্থার ঘটনায় দলের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি সাসপেন্ড করেছে তন্ময় ভট্টাচার্যকে। এইসবের মধ্যে মুর্শিদাবাদের এক মহিলা নেত্রীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। তার জেরে প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীকে বহিষ্কারও করেছে সিপিএম। এখন এসব থেকে বেরতেই ‘ত্রুটি সংশোধন’ অভিযান চালু করছে সিপিএম।