মুক্তিপণ বাবদ চাওয়া হয়েছিল ২৫ লাখ টাকা। পরিবারের তরফে সেই টাকা দেওয়া হয়েছিল। তারপরও ছাড়া হয়নি ৬৬ বছরের ব্যবসায়ীকে। বরং তাঁর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে এলগিন রোডের একটি অতিথি নিবাস থেকে উদ্ধার করা হয় ওই ব্যবসায়ীর দেহ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, মুক্তিপণ পাওয়ার আগেই খুন করা হয়েছিল ওই বৃদ্ধকে। মৃত ব্যবসায়ী শান্তিলাল বেদের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার ছেলের সঙ্গে দোকান থেকে ফিরেছিলেন তিনি। তারপর পান কিনতে বেরিয়েছিলেন। কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক বলেছেন, 'ছেলের সঙ্গে ফেরার পর শান্তিলাল স্থানীয় একটি দোকান থেকে পান কিনতে বেরিয়েছিলেন। সেটা তাঁর রোজকার স্বভাব ছিল। কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাঁদের বাড়ির ল্যান্ডলাইনে ফোন আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, শান্তিলালকে অপহরণ করা হয়েছে। চাওয়া হয় মুক্তিপণ।' পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, ফোনের অপর প্রান্ত থেকে হুমকি দেওয়া হয় যে ২৫ লাখ টাকা না দিলে শান্তিলালের অশ্লীল ছবি ভাইরাল করে দেওয়া হবে। পুলিশে অভিযোগ করলেও ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুনের হুমকি দেওয়া হয় ফোনের অপর প্রান্ত থেকে। সেইসঙ্গে রাত ১০ টার মধ্যে মুক্তিপণ দিতে বলা হয়। সেইমতো জোগাড় করা হয় টাকা। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের দক্ষিণ গেটের বাইরে অপেক্ষা করা হয়। রাত ১০ টা নাগাদ হলুদ ট্যাক্সিতে চেপে এক যুবক আসে এবং টাকা নিয়ে চলে যায়। পরিবর্তে শান্তিলালের মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়। ওই পুলিশ আধিকারিক বলেছেন, 'ওই একই জায়গায় পরিবারের সদস্যদের অপেক্ষা করতে বলা হয়। বলা হয় যে ৩০ মিনিট পর সেখানে শান্তিলাল চলে আসবেন। কিন্তু দু'ঘণ্টা পরও শান্তিলাল না আসায় পরিবারের তরফে ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।' অভিযোগ পেয়ে শান্তিলালের কল রেকর্ডস খতিয়ে দেখা হয়। কয়েকটি ফোন রেকর্ডস এবং চ্যাটের হদিশ মেলে। মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাক করে এলগিন রোডের একটি অতিথি নিবাসে যায় পুলিশ। সেখান থেকেই উদ্ধার করা হয় বৃদ্ধের দেহ। অতিথি নিবাস কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে, এক যুবক এসেছিল। পরে এক বৃদ্ধও আসেন। তাঁকে নিজের কাকা হিসেবে পরিচয় দেয় ওই যুবক। কিছুক্ষণ পরে ওই যুবক চেক-আউট না করেই অতিথি নিবাস ছেড়ে চলে যায়। ইতিমধ্যে ওই যুবকের খোঁজে তল্লাশি চলছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, অভিযুক্তের বয়স ৩০-র ঘরে। শান্তিলালের পূর্ব পরিচিত ছিল সে।