প্রতিদিনই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে করোনা। দৈনিক সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সাধারণ মানুষ তো বটেই করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে একেবারে প্রথম সারির যোদ্ধারা বিশেষ করে চিকিৎসক,নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা একে একে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসক,নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা সংক্রমিত হয়েছেন। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক রাখাটা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় আউটডোরের পরিবর্তে শুধুমাত্র এমার্জেন্সি বিভাগ চালু রাখার উপরে জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর।স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা যাচ্ছে, পার্ক সার্কাসের কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে ২০০ এর বেশি চিকিৎসক-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছেন হাসপাতালের একাধিক সার্জেন এবং অ্যানাসথেসিওলজিস্ট। হাসপাতালের অধ্যক্ষ অজয় রায় এবং নার্সের ইউনিটি সম্পাদক ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়ও করোনা পজিটিভ। এই অবস্থায় শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবা বা জরুরি অস্ত্রোপচারের উপরে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিত্তরঞ্জন সেবা সদন হাসপাতালেও একই অবস্থা। শুধু মাত্র দু'জন চিকিৎসক ছাড়া সকলেই কোভিড পজেটিভ। এই অবস্থায় হাসপাতালে সমস্ত পরিষেবা বন্ধ রেখে শুধুমাত্র এমার্জেন্সি বিভাগ খোলা রাখা হয়েছে। শিয়ালদার এনআরএস হাসপাতালেও ২০০ এর বেশি চিকিৎসক-নার্স,স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত। এই হাসপাতালেও শুধুমাত্র জরুরি বিভাগ খুলে রাখার ব্যাপারে জোর দেওয়া হচ্ছে। একই ছবি কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগে। চিকিৎসক,নার্স,স্বাস্থ্য কর্মী মিলিয়ে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের ৬০ জনেরও বেশি করোনা আক্রান্ত। ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়ে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে পুরসভা করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র কমাতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ।সংক্রমণ যেভাবে ছড়াচ্ছে তার ফলে আগামী দিনে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। তা নিয়ে চিন্তিত স্বাস্থ্য কর্তারা। পরিস্থিতির মোকাবেলায় রাজ্য সরকার নতুন করে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যেই ৫০ জন চিকিৎসক নিয়োগ হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সেই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।