চিকিৎসা ক্ষেত্রে আরও এক নজির সৃষ্টি করল কলকাতা। মুকুন্দপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক কোভিড রোগীর ফুসফুস প্রতিস্থাপনের জন্য অস্ত্রোপচার হল। চিকিৎসকদের মতে, করোনা আবহে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের ঝুঁকি নেওয়া মোটেও সহজ কাজ নয়। এই ধরনের বিরল অস্ত্রোপচারের রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বলেই মনে করা হচ্ছে।হাসপাতাল সূত্রে খবর, মাস তিনেক আগে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ৪৬ বছর বয়সি দীপক হালদার ভর্তি হন।ওই ব্যক্তি একমো সাপোর্টে ছিলেন। তাঁর বাঁদিকের ফুসফুসটি পুরোপুরি বিকল হয়ে যায়। ডান দিনের ফুসফুস দিয়ে কাজ চালানো সম্ভব ছিল না। ফলে ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা ছাড়া চিকিৎসকদের কাছে আর কোনও উপায় ছিল না। জানা যায়, এরপরই সুরাটের ইউনাইটেড গ্রিন নামে একটি হাসপাতালে ব্রেন ডেথ হওয়া ৫৬ বছরের এক ব্যক্তির ফুসফুসটি প্রতিস্থাপনযোগ্য বলে চিকিৎসকরা মনে করেন। ফুসফুসটিকে নিয়ে সংরক্ষিত অবস্থায় সেটিকে বিশেষ বিমানে নিয়ে আসেন চিকিৎসকরা। রাত ১০টার বিশেষ বিমানে সেটিকে কলকাতার হাসপাতালে আনা হয়। গ্রিন করিডর মারফত ১৫ মিনিটের মধ্যে বিমানবন্দর থেকে সেটি পৌঁছে যায় মুকুন্দপুরে। এরপর রাত ১১টা নাগাদ অস্ত্রোপচার শুরু হয়ে যায়।চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, মানুষের শরীরে যে সব অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা যায় ফুসফুস প্রতিস্থাপন তার মধ্যে সব থেকে জটিল এবং ঝুঁকিপূর্ণ। এই অস্ত্রপ্রচারটি করতে ৬-৮ ঘণ্টা সময় লাগে। যে ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে তিনি সম্প্রতি করোনামুক্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে এই অস্ত্রপ্রচার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।হাসপাতাল সূত্রে খবর, রাতভর প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার চলে। আজ সকাল ৬টায় প্রতিস্থাপন সম্পূর্ণ হয়।উল্লেখ্য, রাজ্যে মাত্র দুটি হাসপাতালের ফুসফুস প্রতিস্থাপনের লাইসেন্স রয়েছে। তিন বছর আগে এসএসকেএম হাসপাতালকে ফুসফুস প্রতিস্থাপনের প্রথম ছাড়পত্র পায়। কিন্তু ঠিকমতো রোগী ও ফুসফুস না মেলায় প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়নি। এবার কলকাতার এই বেসরকারি হাসপাতাল ফুসফুস প্রতিস্থাপনের লাইসেন্স পায়।