পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড নিয়ে এখন তদন্ত করছে ইডি–সিবিআই। সদ্য মন্ত্রী সুজিত বসুর বাড়িতেও এসেছিলেন কেন্দ্রীয় এজেন্সির অফিসাররা। তল্লাশি করা হয় বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতেও। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এই ইস্যুকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে বিরোধীরা। তাই এবার পুরসভাগুলিতে নিরপেক্ষতার সঙ্গে গ্রুপ–ডি পদে নিয়োগ করার বিষয়ে বড় পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ সরাসরি বিচ্ছিন্ন করতে খর্ব করা হচ্ছে চেয়ারম্যানদের ক্ষমতা। তার বদলে এবার এই নিয়োগ কমিটির প্রধান🥂 হবেন জেলাশাসকরা।
কেন এমন উদ্যোগ নবান্নর? পুরসভাগুলি চেয়ারম্যানের হাতে এমন ক্ষমতা থাকলে তাতে স্বজনপোষণ বা দুর্নীতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু সেটাই যদি জেলাশাসকদের হাতে থাকে তাহলে এসবের কোনও আশঙ্কাই থাকবে না। আইন মেনে যোগ্যতা দিয়ে পুরসভাগুলিতে শূন্যপদ পূরণ করা হবে। রাজ্যের ১২৮টি পুরসভাতেই এবার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, বামফ্রন্ট সরকারের আমꦺলের পুরসভা দুর্নীতির ভার তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকেই কাঁধে করে এখন নিয়ে যেতে হচ্ছে। বামফ্রন্ট সরকারের জমানায় পুরসভায় গ্রুপ এ, বি, সি এবং ডি পদে কর্মী নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল সংশ্লিষ্ট পুরসভার কর্তৃপক্ষের হাতেই। তাই চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে স্বজনপোষণ আর দুর্নীতি দেখা দেয় বলে অভিযোগ।
তারপর ঠিক কী ঘটল? ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। ২০১৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন গঠন করে। এটি একটি স্বশাসিত সংস্থা। আর এই কমিশনের হাতে বাংলার সব পুরসভার গ্রুপ এ, বি এবং সি কর্মী নিয়োগের ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়। 🦄কিন্তু গ্রুপ–ডি নিয়োগের দায়িত্ব থেকে যায় পুরসভার হাতেই। তাতেই ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। আর এখন এইসব নিয়ে মামলা হওয়ায় তার প্রেক্ষিত🥀ে তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। গ্রুপ–ডি’র এই চাকরি পেতে যোগ্যতা লাগে অষ্টম শ্রেণি পাশ। তাতে আবেদনের ভিড় হয় এবং নিয়োগে সময় লাগে। তাই এবার এই বড় পদক্ষেপ করল নবান্ন।
আরও পড়ুন: কলকাতা পুলিশের ম্যারাথনে যোগ দিলেন অভিষেক, ১০ কিমির দৌড়ে 🅠তৃণমূলের সেনাপতি
আর কী জানা যাচ্ছে? চেয়ারম্যানদের হাতে গ্রুপ–ডি পদে নিয়োগ করার ক্ষমতা থাকায় এই দুর্নীতির অসুখ দেখা দেয়। সেটা এবার প্রকাশ্যে চলে আসায় সরকার এবং দলের বদনাম হচ্ছে। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতেই এবার ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে জেলাশাসকদের। সুতরাং নিয়োগ দুর্নীতি, চাকরি কেনা–বেচার কোনও অভিযোগ উঠবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই এবার ১২৮টি পুরসভার নিয়োগ কমিটির প্রধান পদে বসানো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের। সুতরাং এই পথেই চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগে দুর্নওীতি বন্ধ হবে বলে আশা করছে নবান্ন।