ভুয়ো টিকাকাণ্ডে ঘিরে এবার কি সংঘাতে জড়াতে চলেছে কেন্দ্র এবং রাজ্য? সাম্প্রতিক গতিপ্রকৃতি দেখে এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ সূত্রের খবর, ভুয়ো টিকাকাণ্ডে তদন্ত শুরু করতে চলেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। দু'একদিনের মধ্যেই এফআইআর দায়ের করা হবে। কসবা টিকাকরণ শিবির নিয়ে ইতিমধ্যে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে কলকাতা পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে মূল পাণ্ডা দেবাঞ্জন দেব এবং তাঁর কয়েকজন সহযোগীকে। জেরায় একাধিক তথ্য উঠে আসছে। আর্থিক তছরুপের অভিযোগও উঠেছে। বেআইনি লেনদেনের বিষয়ে জানা গিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে আর্থিক তছরুপ বিরোধী আইনের আওতায় ভুয়ো টিকাকাণ্ডে তদন্ত শুরু করতে চাইছে ইডি। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, তদন্ত শুরুর জন্য রাজ্যের কোনও অনুমতি প্রয়োজন হয় না। ফলে স্বতঃপ্রণোদিতভাবেই মামলা দায়ের করে তদন্তে নামতে পারে ইডি। আগেই কলকাতা পুলিশের থেকে তদন্ত সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিও চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। রাজনৈতিক মহলের মতে, যদি টিকাকাণ্ড নিয়ে কলকাতা পুলিশ এবং ইডি একইসঙ্গে তদন্তে নামে, তাহলে আবারও কেন্দ্র ও রাজ্য সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। আগেই কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার (ক্রাইম) মুরলীধর শর্মা জানিয়েছিলেন, দেবাঞ্জন এবং ভুয়ো টিকাকাণ্ডে ধৃত আরও তিনজনের বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারা-সহ (অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা) একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। সেইসঙ্গে দেবাঞ্জনের সঙ্গে কাজ করেছেন, এমন কয়েকজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দেবাঞ্জনকে সঙ্গে নিয়ে ইএম বাইপাস লাগোয়া মাদুরদহের বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। সেখানে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, কীভাবে প্রতারণার জাল বুনেছিলেন, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভুয়ো টিকা প্রদানের পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা পুরনিগমের নামে ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা, আর্থিক প্রতারণার বিভিন্ন অভিযোগও উঠেছে। একটি অংশের দাবি, পুরনিগমের জমিতে কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে এক নির্মাণ সংস্থার থেকে বড় অঙ্কের টাকা তুলেছেন বলেও অভিযোগ। সেইসঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত রক্ষী রেখেছিলেন। ছিল বাতি লাগানো গাড়িও। পুলিশ সূত্রে খবর, দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে, তা বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।