যেমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তেমন কাজ করেনি। তার ফলে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে তুমুল ভর্ৎসনার মুখে পড়ল পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য নির্বাচন কমিশন। একেবারে কড়া ভাষায় কমিশনের কাজের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে হাইকোর্টেরꦅ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতির উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। মৌখিকভাবে হাইকোর্ট জানায়, মনের মতো রায় না হলে উচ্চতর আদালতে যাওয়া যায়। কিন্তু রায় কোনওভাবে উপেক্ষা করা যায় না। পরে লিখিত রায়ের কপিতেও স্পষ্টভাষায় উল্লেখ করা হয়েছে, স্পর্শকাতর সাতটি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের জন্য গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র কোনও পদক্ষেপ করেনি কমিশন। উলটে বৃহস্পতিবার আরও সময় চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে আর একটু সময় অপেক꧙্ষা করলেই পরিস্থিতির অবনতি হবে।
কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ
১) কলকাতা হাইকোর্ট: রাজ্যের সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে রাজ্য নির্বﷺাচন কমিশনকে। যত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান প্রয়োজন আছে, ততজনকে মোতায়েন করতে হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর যাবতীয় খরচ বহন করবে কেন্দ্রীয় সরক🎃ার। রাজ্য সরকার কোনও খরচ করবে না।
২) কলকাতা হাইকোর্ট: গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ করা হয়নি। আইন-শৃঙ্খলার দিক থেকে স্পর্শকাতর এলাকা এখনও চিহ্নিত করেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বরং কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে যে সেই কাজটা সম্পূর্ণ করতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। কিন্তু এর থেকে বেশি অপেক্ষা (ওয়েট) করলে পরিস্থিতির অবনতি হবে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ব🎐জায় রাখার পক্ষে তা সহায়ক হবে না।
৩) কলকাতা হাইকোর্ট: একটি নির্দেশিকা জারি করে কমিশনকে সব অফিসারদের স্পষ্টভাবে জানাতে হবে যে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সবাইকে সচিত্র পরিচয়পত্র রাখতে ꦅহবে। যখনই পর্যবেক্ষক বা কোনও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্🌞তৃপক্ষ সেই পরিচয়পত্র দেখতে চাইব, তখনই তাঁদের পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। (উল্লেখ্য, বিরোধী নেতারা অভিযোগ করেছিলেন যে সিভিক ভলান্টিয়াররা পঞ্চায়েত ভোটের সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকতে পারবে না বলে হাইকোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পর তাঁদের জন্য খাঁদি উর্দি তৈরি করা হচ্ছে।)
উল্লেখ্য, গতবার পঞ্চায়েত ভোটে♉ রাজ্যে যে লাগামছাড়া হিংসা হয়েছিল, তার প্রেক্ষিতে এবার প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি তোলেন বিরোধী নেতা এবং রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ (যাঁ🌳রা মূলত মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ আন্দোলন করছেন)। তবে মঙ্গলবার হাইকোর্ট জানায় যে সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে না। বরং সাতটি স্পর্শকাতর জেলায় পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনা একাংশ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি এবং জলপাইগুড়ি) কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
তারপরও কার্যত কোনও পদক্ষেপ করেনি কমিশন। উলটে পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণের ঘোষণা হওয়ার পর থেকে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষদিনেই চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে আরও অস্বস্তিতে পড়ে যায় কমিশন। শেষপর্যন্ত পঞ্চায়েত ভোটের জন্য রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির🍌্দেশ দেয় হাইকোর্ট।