বিগত দিনে তৃণমূলের জন্য দুই অস্বস্তির নাম - আনিস খান ও বগটুই। সাগরদিঘি উপনির্বাচনে তৃণমূলের হারের পর প্রশ্ন উঠেছিল, তবে কি এই দুই ঘটনার জেরে সংখ্যালঘুদের মধ্যে আস্থা হারাচ্ছে ঘাসফুল শিবির? এই প্রশ্নের নির্দিষ্ট কোনও জবাব এখনও মেলেনি। পঞ্চায়েত ভোটে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বহু এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে দেখা গিয়েছে 'প্রতিরোধ'। ভোটের ফলে হয়ত এই সব জায়গায় একচেটিয়া ভাবে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। তবে সেই ফলাফল নিয়ে সংশয় অনেকের মনেই। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন দেদার ছাপ্পা থেকে মৃত্যুর ঘটনা দখেছে গোটা রাজ্য। তবে এত কিছুর মাঝেও তৃণমূলকে স্বস্তি দিল আমতা, বগটুই। পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই দুই জায়গায় বিরোধীরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছিল 'পীড়িতদের'। তবে কোনও আবেগের প্রতিফলন ভোট বাক্সে পড়েনি। (পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় খবর এবং লাইভ আপডেট জানতে ক্লিক করুন এখানে)
গতবছর ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ছাত্রনেতা আনিস খান নিজের বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছিলেন। আনিসের পরিবারের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে আনিসকে। পুলিশের বিরুদ্ধে অভ🦹িযোগের আঙুল তুলে মামলাও দায়ের হয়। সিবিআইকে দিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছিলেন সালেম খান। এহেন আনিসের দুই আত্মীয়কে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট দিয়েছিল সিপিএম। তবে সেই দু'জনই হেরে যান। জানা গিয়েছে, আমতা-২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির ৪১ নম্বর আসনে সিপিএমের প্রার্থী হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন আনিসের দাদা সামসুদ্দিন। তবে তৃণমূলের কলিম আলি খানের কাছে তিনি হেরে যান। এদিকে আনিসের মামা, সাবির খানও সিপিএমের টিকিটে আমতা-২ ব্লকের কুশবেড়িয়ার ১৯৬ নম্বর বুথে দাঁড়িয়েছিলেন। তৃণমূল প্রার্থী তথা বোর্ডের বিদায়ী উপপ্রধান হাসেম খানের কাছে তিনিও হেরে যান।
এদিকে গতবছর মার্চ মাসের ২১ তারিখ বীরভূমের বগটুইতে☂ জীবন্ত পুড়িয়ে 🐼মারা হয়েছিল অন্তত ৯ জনকে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা ঘটে। প্রথমে খুন হন রামপুরহাটের ১ নম্বর ব্লকের বগসাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ। পরে 'প্রতিষোধ' নিতে সোনা শেখের বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। এই ঘটনায় গোটা দেশ হতবাক হয়ে যায়। যদিও বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল প্রথমে বলেছিলেন টিভি বিস্ফোরণে নাকি এই ঘটনা ঘটেছিল। এই বিভীষিকাময় ঘটনার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন মিহিলাল শেখ। সেই মিহিলালের পরিবার থেকে কয়েক জন এ বছর বিজেপির টিকিটে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে জয় অধরা থেকে গিয়েছে।
মিহিলালের দিদি মেরিনা বিবি বড়𒅌শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের বগটুই গ্রামের আসনে বিজেপির প্রার্থী হয়ে হেরেছেন। এদিকে মিহিলালের পুত্রবধূ সীমা খাতুন এ বার বিজেপির টিকিটে রামপুরহাট-১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির আসনে দাঁড়িয়ে হেরেছেন। এদিকে বগটুই গ্রামের চারটি বুথের দু'টি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই জিতেছিল তৃণমূল। যে দু'টি বুথে ভোট হয়, তাতে জয়ী ঘাসফুল শিবির। গতবছরের এই দুই ঘটনা গোটা রাজ্য তোলপাড় করেছিল। সংখ্যালঘুদের মনে সার্🔯বিক ভাবে এর কোনও প্রভাব পড়েছে কি না, তা অঙ্ক কষে বলা মুশকিল। তবে যেখানে এই ঘটনাগুলি ঘটেছে, সেই আমতা আর বগটুই যে এখনও তৃণমূলে আস্থা হারায়নি, তা স্পষ্ট এই ফল থেকে।