লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। সেক্ষেত্রে তারা সংখ্যালঘু হযে পড়েছে জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে। কিন্তু শরিকদের সহায়তায় তৈরি হচ্ছে এনডিএ সরকার। এখন আর এটা বিজেপি বা মোদী স🐭রকার বলা যাবে না। সারা দেশেই ফল খারাপ হয়েছে বিজেপির। আর বাংলায় তো দাঁড়াতেই পারেনি বিজেপি। ৪২টি আসনের মধ্যে ১২টি আসন পেয়েছে। ২৯টি আসন পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই আবহে আজ, রবিবার সন্ধ্যায় শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদী। এই আবহে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের মতোই এবার লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল আবার বোঝাল শিল্প–কৃষি কিছু না পেলেও সিঙ্গুরের ভোটার তৃণমূল কংগ্রেসের পাশেই আছে। প্রায় ১৯ হাজার ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় লিড পেয়েছেন হুগলির এই কেন্দ্র থেকে।
২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই সিঙ্গুরই হয়ে উঠেছিল টার্নিং পয়েন্ট। অনিচ্ছুক চাষিদের জমি যা টাটারা নিয়েছিলেন, ওরা ফিরে যাওয়ার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কথা মতো গাড়ি কারখানার জন্য নেওয়া ওইসব জমি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন চাষিদের। জমিদাতারা তখন ꩵচেয়েছিলেন, ওই জমি আবার চাষযোগ্য হিসাবে তাঁদের হাতে ফিরে আসুক। কিন্তু সেটা ঘটেনি বলে অভিযোগ। ন্যানো গাড়ি তৈরির কারখানার জন্য নেওয়া সেই প্রায় হাজার একর জমিতে আজও কোনও চাষবাস সেভাবে হয় না। কিন্তু জমি তো ফিরে পাওয়া গিয়েছে। এবার সেখানে কিছু একটা হবে বলে তাঁরা আশা করছেন। কারণ লকেট চট্টোপাধ্যায় সাংসদ থাকলেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। এবার রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদ হয়েছেন। তাই সিঙ্গুরবাসীর মনে এখন আশা জেগেছে।
আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় চাকরির পরীক্ষা বাতিল, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ౠে যেতেই থমকে গেল নিয়োগ প্রক্রিয়া
তবে এখানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দারুণভাবে কাজ করেছে। এখানের মহিলারা এমন প্রকল্প পেয়ে ব্যাপক সাড়া দিয়েছেন ভোটবাক্সে। আর তার জেরেই তৃণমূল কংগ্রেস এখানে বিরোধীদের পিছনে ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। 🅘একদা এখানের জমি আন্দোলনের পরিচিত মুখ তথা সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ দুধকুমার ধারার বক্তব্য, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো প্রকল্প না থাকলে তৃণমূল কংগ্রেসকে এখানে চাপে পড়তে হতো।’ শিল্প আনবেন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সিঙ্গুর থেকে লিড পান বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ২৮ হাজার ভোটে জেতে। আর এবার ‘লিড’ প্রায় ১০ হাজার কমলেও বিজেপিকে ছাপিয়ে গিয়েছে।
বিজেপিকে সিঙ্গুর প্রত্যাখ্যান করেছে। এখানের বিধায়ক সিঙ্গুরে জমি আন🌜্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। হ্যাঁ, তিনি বেচারাম মান্না। এখন তিনি রাজ্যের মন্ত্রীও। বেচারাম মান্না বলেন, ‘ওই জমি যে তিনটি পঞ্চায়েতে পড়ে, সেখানে দল ভাল ফল করেছে। ক্ষোভ থাকলে সেটা হতো না।’ তবে এখানের মানুষজনের কথায়, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিয়ে দিদি আমাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। অনেক ইচ্ছা থাকলেও করতে পারতাম না। এখন এই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের দৌলতে তা করা সম্ভব হচ্ছে। আবার টাকা জমিয়ে সংসারের বড় সিদ্ধান্তও নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। আগে ধার করতে হতো। না হলে স্বামীর কাছে চাইতে হতো। এখন সেটা করতে হয় না। ছোট ছোট শখ নিজেরাই পূরণ করতে পারি। আর দিদির উপর ভরসা আছে। এই জমিরও ব্যবস্থা তিনি করবেন।’